চলছে রাতারাতি দোকান নির্মাণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নির্ধারিত সীমানা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে প্রশাসনের মাইকিংয়ের পরেও থামছে না দখলবাজি। একটি দোকানও উচ্ছেদ করা হয়নি। বরং রাতের অন্ধকারে চলছে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী এলাকার কয়েকটি বাতিল প্লট দখলে নিয়েছে প্রভাবশালীরা।
ব্যাপক দখলবাজি, প্রশাসনের একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারী জমিতে অবৈধ দোকান নির্মাণের কারণে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সুগন্ধা পয়েন্টের ২ নং সড়কে ড্রাগন মার্কেটের পূর্ব পাশে বাতিল প্লটে নতুন করে তিনটি দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। দোকানগুলো ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এর আগে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিলো প্রশাসন। বন্দোবস্ত মামলা নং-২৬/২০০২-২০০৩ এর অধীনে সরকারি জায়গা চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড ও কাঁটাতার দিয়ে সেখানে শ’খানেক নারিকেল গাছের চারা রোপন করেছিল প্রশাসন।
কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই কাঁটাতার, নারিকেল গাছ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া সাইনবোর্ড তুলে নিয়ে যায় দখলবাজরা।
অবৈধ স্থাপনা/দোকান নির্মাণের পর একেকটি দোকান ১০ থেকে ১২ লাখ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
চিহ্নিত দখলবাজ সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে সরকারী জমিতে দোকান নির্মান করলেও প্রশাসনের খবর নেই। এজন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দুর্বলতাকে দায়ী করেছে স্থানীয়রা।
সৈকত এলাকা থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়ে ৭ জুলাই মাইকিং করে প্রশাসন। অন্যথায় ৮ জুলাই থেকে প্রশাসনিকভাবে এসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের এমন হুঁশিয়ারির পরেও থামেনি দখলবাজি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার মোক্তার বলেন, সুগন্ধা পয়েন্টের অবৈধ দোকানগুলো সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হয়। যারা নির্দেশ অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে, উচ্ছেদকৃত জায়গা পুনর্দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি অনেকবার গিয়ে দেখেছি। দখলের কোন চিহ্ন পাইনি। এসিল্যান্ডের এমন বক্তব্যকে অনেকে রহস্যজনক মন্তব্য করেছে।
এদিকে, কক্সবাজার সাগরপাড়ের সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলার দাবিতে আন্দোলন করে আমরা কক্সবাজারবাসী নামক একটি একটি সামাজিক সংগঠন। দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এসব দাবির প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের সাথে বৈঠক বসে জেলা প্রশাসন। ওই বৈঠকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রকৃত হকারদের তালিকা করে অবৈধ স্থাপনাসমূহ সরিয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আফসার। প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত রাখে। এই সুযোগে দখলবাজরা আবারো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার বলেন, সৈকত এলাকার দোকানদারদের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত হকারদের পুনর্বাসন এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।সাগরপাড়ে কোন স্থাপনা থাকতে দেয়া হবেনা।