মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান,টেকনাফ :
টেকনাফের হ্নীলায় এক দম্পতির দীর্ঘদিনের দাম্পত্য কলহের জেরধরে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী ভাড়াটে লোকজন দিয়ে স্ত্রীর বসত-বাড়ি তছনছ করে দিয়ে স্বর্ণালংকারসহ যাবতীয় আসবাব পত্র লুট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় মেম্বার ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে নির্যাতিত নারী মাহবুর রহমান প্রকাশ উলা মিয়ার মেয়ে শাহেনা আক্তার জানান, ২০০২ সালে ইসলামী শরিয়াহ মতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ১নং ওয়ার্ড আলী আকবর পাড়ার ইসলাম মিয়ার পুত্র মোঃ মুসলিম প্রকাশ বাদশা মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে ৩ ছেলে-মেয়ের আর্বিভাব হয়। এরই মধ্যে হঠাৎ ২০০৭ সালের দিকে বাদশা মিয়া সাগর পথে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। সেখানে কিছুদিন স্থায়ী হওয়ার পর এক মহিলার ফাঁদে পড়ে বিয়ের পিঁিড়তে বসে বলে খবর আসে। তা শুনে স্ত্রী শাহেনা ২য় বিয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে বলে আমি দেশে এসে তোকে মেরে ফেলব বলে হুমকি দেয় এবং শাহেনার খোরাকী বন্ধ করে দেয়। এর প্রতিকার চেয়ে মেয়ে বাবা ও মা পৃথকভাবে জীবনের নিরাপত্তা ও খোরাকী চেয়ে থানায় পৃথক অভিযোগ এবং জিডি করেন। থানায় উভয়পক্ষের সালিশী বৈঠকে শাহেনাকে খোরাকী দেওয়ার সিদ্বান্ত হয়। এভাবে চলার ৬ মাসের মাথায় বাদশা ২০১৩ সালের শেষের দিকে দেশে ফিরে এসে স্বস্ত্রীক শ্বাশুড় বাড়িতে অবস্থান নেয়। সেখানে অবস্থান নেওয়ার পর রোজারঘোনায় একটি নিজস্ব বসত-বাড়ি তৈরী করে বাদশা দম্পতি আলাদা সংসার শুরু করে। তাদের এই সুখের সংসার ৫/৬ মাস চলার পরই এক সুন্দরী মহিলার পরকীয়ায় পড়ে দিশেহারা হয়ে যায় বাদশা মিয়া। সবার অগোচরে ঐ সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করে আলাদা সংসার পাতে। শাহেনা এ খবর পেয়ে স্বামীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এরই জেরধরে স্বামী দিনের বেলা এসে শাহেনাকে মারধর করে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলে এবং না হলে রাতের বেলা ডাকাত দিয়ে হামলার হুমকি দেয়। তা সত্বেও শাহেনা জোর করে ঐ বাড়িতে রাত কাটানোয় ২০১৪ সালে এক অন্ধকার রাতে শাহেনাকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করলে পুলিশী সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। এরপর স্থানীয় মেম্বারের নিকট সালিশ করা হলে শাহেনাকে মোহরানা দেওয়ার দাবী উঠে। ঐ সালিশ থেকে সব সিদ্বান্ত মেনে বের হয়ে স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে ফেলে বাড়িটি তালা লাগিয়ে উধাও হয়ে যায়। এই কারণে স্ত্রী শাহেনা বাড়িতে ঢুকতে না পারলেও দেখাশুনা করে চলে এসে বাপের বাড়িতে থাকত। এই সুযোগে স্বামী বাদশা মিয়া ক্ষুদ্ধ হয়ে গত ৭জুলাই রাতে ভাড়াটে রোজারঘোনার মৃত নুরুল আমিনের পুত্র মোস্তাক মিয়া,জাফর আলম, মৃত আব্দুলুর পুত্র নুরুল আমিন প্রকাশ বাদশাদি,নুরুল আমিনের পুত্র মহি উদ্দিন, মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র আব্দু শুক্কুর,ইয়াছিন, নুর আহমদের পুত্র শামসুল আলম,নুরুল আলমের পুত্র ফরিদ,আজিজুর রহমানের পুত্র ইসলাম ও বেলালসহ ১৫/২০জনের স্বশস্ত্র গ্রুপ দিয়ে শাহেনার বসত-বাড়ি ভেঙ্গে তছনছ করে এবং স্বর্ণালংকারসহ যাবতীয় আসবাব পত্র লুট করে নেয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় মেম্বার মোঃ ইউনুছ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং টেকনাফ থানা পুলিশের এএসআই আজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাংচুরকৃত বসত বাড়ির কিছু অংশ উদ্ধার করতে পারলেও লুট হওয়া আসবাব পত্র উদ্ধার করতে পারেনি। স্থানীয় মেম্বার মোঃ ইউনুছ বলেন অভিযুক্ত বাদশা লম্পট প্রতারক। তবে এই ব্যাপারে শাহেনা বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।