কক্সবাজার আলো ডেস্ক :
ঘর থেকে বের হলেই আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে ব্লগারদের। যা কিছু ব্লগে লেখা হয়েছে তার অনেকটাই অনেকে লুকিয়ে রাখছেন, স্কিপ করে রাখছেন, পরিচিত ব্লগাররা তাই করছেন। তাদের স্বজনরা ঘরে না ফেরা পর্যন্ত প্রচ- আশঙ্কায় থাকছেন। তারা অসহায়। এভাবে কতদিন চলে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে গেলে তারাও বলে দেশ ছেড়ে চলে যেতে। স্বদেশ আর নিরাপদ মনে হচ্ছে না তাদের কাছে।
বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে চার জন ব্লগারকে একই কায়দায় হত্যার পর সর্বশেষ শিকার হলেন নিলাদ্রী চ্যাটার্জী। যিনি নীল নিলয় ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। নিহতদের স্বজনরা বলছেন হত্যাকারীরা বিচারের মুখোমুখি না হওয়াতেই একের পর এক ব্লগার হত্যাকান্ড ঘটছে ।
এমন পরিস্থিতিতে ব্লগাররা কিভাবে জীবন যাপন করছেন তা জানতে বিবিসি বাংলার সাংবাদিক পুলকগুপ্ত কথা বলেন, এক ব্লগারের সঙ্গে যিনি একুশ তপাদার নামে অনলাইনে লেখালেখি করেন।
একুশ তপাদার জানান, নিলয় হত্যার পর মর্মাহত হয়েছি, সেই সাথে ভীত সন্ত্রস্ত্র ও অসহায় বোধ করছি। ঘরের মধ্যে এসে ব্লগারদের হত্যা করা হচ্ছে, এর চাইতে অসহায়ের আর কিছু হতে পারে না ।
তিনি আরও বলেন, ব্লগারদের বেশকিছু তালিকা করা হয়েছে । তালিকাভুক্ত ব্লগাররা অনেক সময় হুমকি ধামকির শিকার হয়েছেন ।কিন্তু প্রথমে তারা এগুলো আমলে নেননি। কিন্তু যখন হত্যাকান্ড শুরু করা হল তখন থেকে নিজেদেরকে অনিরাপদ বোধ করি। তারপর থকে স্বাভাবিক চলাচল আগের যে কোন সময়ের চাইতে সীমিত করে ফেলেছি।
একুশ তপাদার বলেন, এখন যে কোন কাজের জন্য বা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে হলে নিরাপওার কথা মাথায় রাখতে হয় । সময় পরিবর্তন করে চলতে হয়, যাতে তারা আমাদের চলাফেরার গতিবিধি ধরতে না পারে। বেশিরভাগ সময় একা না চলার চেষ্টা করি। সব সময় চোখ কান খোলা রেখে চলতে হয় । বেশ কিছু দিন ধরে বাসায়ই থাকছি এবং আরও বেশ কিছু দিন বাসায় থাকব ।
তিনি আরও বলেন বেশকিছু লেখা তার সাইড থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। আর কিছু লেখা প্রকাশ করছেন না। আগে যে বিষয়গুলো নিয়ে ফ্রিভাবে লিখতেন তার অনেক বিষয় এখন বাদ দিয়েছেন । তার পরিচিত অনেক ব্লগার একই কাজ করছেন । ব্লগারদের প্রায় সবাই তদের স্বাভাবিক চলাফেরা গ-ির মধ্যে রাখছেন। সবাই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছেন । পরিবারের সদস্যরাও এনিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।
একুশ তপাদার জানান, ব্লগারদের হত্যার পরে পরিস্থিতি এমন মনে হচ্ছে যে বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি ভাবতে হচ্ছে । দেশের ভেতরে নিরাপত্তা না থাকায় এমনটা ভাবতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। ।
এদিকে বাংলাদেশে ব্লগার হত্যাককা-ের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা বলছেন, সামাজিক যোগাযেগের মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নামে ব্লগারদের হত্যার হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেয়া হচ্ছে ।এর ফলে ব্লগার ও লেখকদের মধ্যে আতংঙ্ক, উৎকন্ঠা বাড়ছে।
ঘোষণা দিয়ে এ ধরনের হত্যাকান্ড ঘটানো হচ্ছে । তারপরও এ ধরনের ঘটনা সরকার কেন থামাতে পারছে না স্বররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে তা জানতে চান বিবিসি বাংলার সাংবাদিক মোয়জ্জেম হোসেন ।
মন্ত্রী বলেন, জঙ্গিরা অনেক বিপর্যয় ঘটানোর চেষ্টা করছে। এর বেশির ভাগ আমরা প্রতিরোধ করতে পেরেছি । দু একটা ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়নি। যে জিনিসটা নিয়ে আশাবাদি তা হল, এসব হত্যাকান্ডের আলামত সংগ্রহ করে হত্যাকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে ।