অন্যান্য বছরের মতো এবারও সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সীমানায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। ১১ মে বৃহস্পতিবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সে অনুযায়ী কুতুবদিয়া উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর ইতিমধ্যে সব জেলে ও নৌকার মালিকদের নিয়ে সভা-সমাবেশ, মাইকিং, লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে সচেতন ও সতর্ক করছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন এ সময়ে কুতুবদিয়ার ১০ হাজার ৯শ ৫৯ জন জেলে সরকারি সহয়তা পাবে। প্রতি জেলেকে সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিনামূল্যে প্রথম ধাপে ৫৬ কেজি ও দ্বিতীয় ধাপে ৩০ কেজি করে মোট ৮৬ কেজি চাউল প্রদান করা হবে বলে জানান কুতুবদিয়া উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব।
সরেজমিনে বুধবার বিকেলে উপজেলার উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের আকবর বলী ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, শতাধিক নৌকা ঘাটে নোঙর করে আছে। কয়েকটি ছোট নৌকা থেকে মাছ খালাস করা হচ্ছে। তারপর মাছগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
জেলেরা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কারণে গত ১০দিন ধরে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ করেছে। তার সাথে যুক্ত হচ্ছে সরকারি নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিন। এ দীর্ঘদিনে সংসার চালানোর মত তাদের কোন জমানো টাকা নেই। মাছ ধরা বন্ধ থাকলে মালিকপক্ষও কোন সহযোগিতা করে না। বিগত বছরগুলোতে নানা জটিলতায় ঠিক সময়ে সরকারের বরাদ্দের চাউল পাননি। এমন বাস্তবতার মধ্যেই সঠিক সময়ে চাউল বিতরণের দাবি জেলেদের। শুধু তাই নয়, নিবন্ধিত হয়েও নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের হাতে সরকারি সহায়তা না পৌঁছানোর অভিযোগও করেছে অনেকে। স্থানীয় কয়েক জনপ্রতিনিধি তাদের পছন্দের জেলেদের সহায়তা করেন বাকীদের সহয়তা করেন না বলে অভিযোগ তুলেন জেলেরা।
কুতুবদিয়ার ধূরুং ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দীন জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় মোখা’র আতংকে গত ১১ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে কুতুবদিয়ার শতাধিক নৌকা গভীর সাগর থেকে কূলে ফিরে এসেছে। তারমধ্য তার নিজের ৬ টি নৌকাও রয়েছে। ওই ৬টি নৌকায় ১৩৫ জন জেলের মধ্যে সরকারের সহয়তা পায় মাত্র ৩০ জন। এভাবেই অনেক জেলে পায় না সরকারি সহয়তা। তিনি নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে এ সহয়তা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন।