এম.এ আজিজ রাসেল :
মানব পাচারের ভিক্টিমদের সমন্বিতভাবে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২১ নভেম্বর) বিকালে জেলা প্রশাসনের এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে ইনসিডিন বাংলাদেশ, এ্যাটসেক বাংলাদেশ ও জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জি এস এম জাফরউল্লাহ।
বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে পশ্চাৎপদ এলাকার কিছু মানুষের ধারণা, কোনো রকমে একবার বিদেশে পাড়ি জমাতে পারলেই ভাগ্য বদলে যাবে। এ ধরনের অজ্ঞ মানুষই বিশেষভাবে প্রতারণার শিকার হন। প্রতিবেশীদের প্রতারিত হওয়ার পরও অনেকে একই দালাল চক্রকে বিশ্বাস করে নিজের বাড়িঘর বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা তুলে দেন তাদের হাতে। ফলে স্বভাবতই এরা সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেন। তাই তাদের সচেতন করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।”
ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও এ্যাটসেক বাংলাদেশ সেপ্টার চেয়ারপারসন একেএম মাসুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক উপ-সচিব শ্রাবস্তী রায়।
সুইজারল্যান্ড ও উইনরক ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সালমা আলী, সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ বড়ুয়া, সদর মডেল থানার ওসি শেখ মুনীর-উল গীয়াস, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম ও উইনরক ইন্টারন্যাশনালের ফিল্ড অফিসার সুজন ভট্টাচার্য। সভা সঞ্চালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী সৈয়দা নুরে নাবিলা তাবাসসুম।
সভায় বক্তারা বলেন, “পাশাপাশি মানব পাচার রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে দারিদ্র্যের কারণে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা এবং বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। বৃদ্ধি করতে হবে তরুণদের দক্ষতা। একইসাথে যারা বিদেশে যেতে আগ্রহী তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। কোনো নাগরিক যাতে অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার নামে আত্মহননের পথ বেছে না নেয় তার দিকে নজর দিতে হবে। সীমান্ত বা জল-স্থল ও আকাশ পথে নজরদারি বাড়াতে হবে।”
ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এ.কে.এম মাসুদ আলী বলেন, “ইনসিডিন বাংলাদেশ, সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতায় উইনরক ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “আশ্বাস” প্রকল্পের মাধ্যমে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সমন্বিত সহায়তা প্রদানে জাতীয় রেফারেল কাঠামো গড়ে তোলার রোডম্যাপ প্রণয়নে কাজ করে যাচ্ছে। মানব পাচার শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান বা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। পাচার হতে উদ্ধার পাওয়া ব্যক্তির জন্য সমন্বিত সহায়তার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ আবশ্যক। এ জন্য সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও বেসরকারি এনজিও এর যৌথ উদ্যোগ গড়ে তুলতে “জাতীয় রেফারেল কাঠামো”র বিকল্প নেই।”