ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার আলো :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল এবং ৩নং সতর্ক সংকেত থাকায় সেন্টমার্টিনে রবিবার থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন।
রবিবার (৫ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী।
ইউএনও পারভেজ চৌধুরী জানান, ‘আবহাওয়া খারাপ এবং সমুদ্রবন্দরে ৩নং সতর্ক সংকেত থাকায় সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাই রবিবার থেকে আবহাওয়া পরিস্থিতি যতদিন ভাল হচ্ছে না ততদিন এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। সেন্টমার্টিনের প্যানেল চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, শনিবার সমুদ্রবন্দরে ৩নং সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলায় জাহাজ কর্তৃপক্ষরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জাহাজ সেন্টমার্টিন যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১৫৪ টি আবাসিক হোটেলে বর্তমানে ৮০০ মতো পর্যটক রয়েছে। যারা ফিরে যেতে পারেনি। কারণ সেন্টমার্টিন থেকে জাহাজ ছাড়ার পরে উপজেলা প্রশাসন থেকে জাহাজ বন্ধের ঘোষণা আসে। এতে পর্যটকদের পরবর্তী নির্দেশনা আসা পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপে থাকতে হবে। তবে অনেকে ইচ্ছাকৃত থেকে গেছেন দ্বীপে। দ্বীপে সব পর্যটকরা নিরাপদে ও ভালো আছেন।
সাভার থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক মাহির পাঠান বলেন, অপ্পো মোবাইল কোম্পানির আমরা ১৫০ জনের একটা টিম সেন্টমার্টিন আসি। অন্য পর্যটকদের মতো আমরা সেন্টমার্টিন আটকা পড়িনি। গতকাল থেকে সী প্রবাল বীচ রিসোর্টে অবস্থা করছি। আমরা ঘুরতে আসছি ৩ দিনের জন্য। ৭ তারিখ জাহাজ আসলে ফিরে যাব। থাকা খাওয়ায় কোনো ধরণের সমস্যা হচ্ছেনা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ডাক্তার মিজান বলেন, আমি স্ত্রীকে নিয়ে হানিমুনে আসছি ২ দিনের জন্য। কাল যদি জাহাজ না আসে ১ দিন বেশি থাকতে হতে পারে। সেন্টমার্টিনে গতকাল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থাকলে রবিবার সকাল থেকে সুন্দর আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে। সেন্টমার্টিনের প্রকৃতি অনেক সুন্দর। সমুদ্রও শান্ত রয়েছে। প্রশাসন চাইলে আজকেও সেন্টমার্টিন জাহাজ আসার অনুমতি দিতে পারতেন। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের সেন্টমার্টিনের সময়গুলো খুব ভালো যাচ্ছে।
সী প্রবাল বীচ রিসোর্টের পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, ৪ ডিসেম্বর সেন্টমার্টিনে হালকা বৃষ্টি আর বাতাস থাকলেও রবিবার সকাল থেকে শীতকালীন আবহাওয়া হয়ে গেছে। সমুদ্র একদম শান্ত। সমুদ্র এতই শান্ত জাহাজ চলাচলে করতে কোনো সমস্যা হবেনা।
তিনি আরো বলেন, সেন্টমার্টিনে অবস্থানরত সকল পর্যটক ভালো রয়েছে। তবে প্রশাসন যদি কাল থেকে স্থানীয় ট্রলার চলালের অনুমতি না দেই সেক্ষেত্রে দ্বীপে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ও খাদ্য সামগ্রিক সংকট দেখা দিতে পারে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক দুলাল দাশ বলেন, ‘ ৩নং সতর্ক সংকেতটি কেটে যেতে দুয়েকদিন সময় লাগবে। এরপর আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।
এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে কিছুটা সাগর উত্তাল রয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।