কক্সবাজার শহরের কলাতলীর সৈকত পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সরকারি পাহাড় কেটে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে ৫০টি অবৈধ ঘর উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।উচ্ছেদকৃত ঘরের বাঁশের খুঁটি ও টিন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়া কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪০ শতক জায়গাও দখল মুক্ত করেছে প্রশাসন।এসময় প্রায় ১২টি অবৈধ ঝুঁপড়ি ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে।মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কক্সবাজার সদর (ভূমি) কমিশনার মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে এই অভিযান চলে। এতে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক শরিফুল ইসলাম, ৩৩ আনসার ব্যাটালিয়ানের কমান্ডার মুফিজুর রহমান ও সদর থানার এসআই রাজীব কান্তি নাথ। অভিযোগ রয়েছে,প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে কলাতলীর সৈকত পাড়া এলাকায় এই আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপন করিয়েছেন কক্সবাজার শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুর রহমান এবং কক্সবাজারের প্রধান আরএসও নেতা সালাউল।আর এসব জায়গায় পানির সমস্যা দূর করতে লাখ টাকা খরচ করে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ এবং বিদ্যূতের অবৈধ সংযোগ। এই আবাসন প্রকল্পের সঙ্গে স্থানীয় আরও কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও রয়েছেন।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক শরিফুল ইসলাম জানান,কলাতলীর সৈকত পাড়া এলাকায় উচ্ছেদকৃত ঘরের টিন ও বাঁশের ঘুটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। জব্দ করা হয়েছে বৈদ্যুতিক তারও।পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরে যেতে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এমনকি চার অভিযোগে শতাধিক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা তদন্ত রয়েছে। তিনি আরও জানান,কলাতলীর সৈকত পাড়া এলাকায় এ পর্যন্ত চারবার অভিযান পরিচালিত হয়েছে।কিন্তু প্রকৃত দখলদারা ধরা না পড়ায় উচ্ছেদকৃত জায়গা পুনরায় দখল হয়ে যাচ্ছে।তবে পাহাড়ে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
কক্সবাজার সদর (ভূমি) কমিশনার মাজহারুল ইসলাম জানান,শহরের কলাতলীর সৈকত পাড়া এলাকায় পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করায় অর্ধশত অবৈধ বসতি উচ্ছেদের পাশাপাশি কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪০ শতক জমি দখল মুক্ত করা হয়েছে।এই অভিযানে ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে নির্মাণ করা প্রায় ২০টি ঝুঁপড়ি ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দীপক শর্মা বলেন,কলাতলী ছাড়াও, শহরের ঘোনার পাড়া, বৈদ্যঘোনা, পাহাড়তলী, লাইট হাউজ, হালিমা পাড়া, বাস টার্মিনালস্থ লারপাড়া, ডিককুল, সদর উপজেলা পরিষদের পিছনে, বিজিবি ক্যাম্পের পশ্চিম পাশে ও সাহিত্যিকা পল্লী এলাকায় চলছে পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ। এসব স্থানে প্রশাসন বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান করলও থেমে নেই পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ।অথচ পরিবেশ অধিদপ্তর নীরব।আমরা মানববন্ধন,প্রতিবাদ সমাবেশ করেও ফল পাচ্ছি না।এ অবস্থায় পাহাড় রক্ষা করা না হলে কক্সবাজারে পরিবেশের মারাত্বক বিপর্যয় ঘটবে।