মো : তারেকুর রহমান আজাদ :
রামুতে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর নির্মম অত্যাচার ও ধরালো অস্ত্রের আঘাতে স্ত্রীর প্রাণ যায় যায় অবস্থা। এ ঘটনায় বাবা কর্তৃক মেয়েও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবার সূত্র। পরিবারের বড় ছেলে শফিউল বলেন, বুধবার (৫ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির ছালিয়া তলীর বাসিন্দা নওশাদ মিয়া (৪৫) পারিবারিক কলহের জের ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার স্ত্রী লায়লা বেগম (৪০) কে গুরুতর আহত করে। এ সময় অমানুষিক যৌন নির্যাতনের শিকার ও আহত হন তার সৎ মেয়ে আলো (ছদ্বনাম)। এ ব্যাপারে আহতের বোন জানান, লায়লা বেগম বিগত তিন বছর আগে প্রথম স্বামীর সংসার ত্যাগ করে দ্বিতীয় স্বামী টাঙ্গাইলের নওশাদ মিয়াকে বিয়ে করেন। লায়লা বেগম পেশায় একজন গৃহিনী তিনি স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের রান্না বান্নার কাজ করেন। বিয়ের পর দু-বছর সুখ শান্তিতে অতিবাহিত হলেও গত এক বছর যাবৎ তাদের মাঝে পারিবারিক কলহ প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে। লায়লা বেগম যখন ব্যাচেলরদের রান্নার কাজ করার লক্ষ্যে বাড়ি ত্যাগ করেন ঠিক সেই সময়ে পাষন্ড পিতা সৎ মেয়েকে বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে থাকেন যা একটি সমাজ কখনো মেনে নিবে না। মেয়ে তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে নওশাদ। এভাবে প্রায় ৩ মাস অনৈতিক প্রস্তাবের মাধ্যমে মেয়েকে হয়রানি করে আসছে সৎ পিতা নওশাদ মিয়া। অবশেষে মেয়ের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে সে তার মা লায়লা বেগমকে সব কথা বলে দেয়। তখন লায়লা বেগমের আসমান মাথায় পড়ে এবং মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নওশাদকে সতর্ক করে এবং এই রকম ঘৃণিত কাজ আর না করার মুচলেকা নিয়ে স্বামীকে ক্ষমা করে মা-মেয়ে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে মেয়ের দিকে পুনরায় কু-দৃষ্টি পড়ে অসৎ নওশাদের। আগের মতো আবার বিভিন্ন কু-প্রস্তাব ও লালসার শিকার করতে চায়। একদিন সুযোগ পেয়ে মেয়েকে যৌন নির্যাতন করে ছাড়ে নওশাদ, তা তার মা লায়লা বেগম জানতে পারলে সাথে সাথে নওশাদকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে এবং তার সাথে আর সংসার না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়। নওশাদ কিন্তু এমনিতেই বাড়ি ত্যাগ করে নাই, সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকলেও রাতে বাড়িতে এসে মা-মেয়েকে একা পেয়ে লায়লা বেগমের উপর ঝাপিয়ে পড়ে নওশাদ মিয়া এবং বেদড়ক মারধর করতে থাকে মাকে রক্ষা করতে মেয়ে এগিয়ে আসলে তাকেও গুরুতর আহত করে। লায়লা বেগমকে অমানবিক নির্যাতন ও প্রাণে মেরে ফেলার জন্য আঘাত করতে থাকলে মেয়ের চিৎকার শুনে দ্রুত ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে পাষন্ড নওশাদ মিয়া পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় আহত লায়লা বেগমকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপরদিকে দুদিন পর পাষন্ড নওশাদের সন্ধান পেলে এলাকাবাসী ধরে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সোপর্দ করে পরে সেখান থেকে থানা কর্তৃপক্ষ তাকে রামু থানায় প্রেরণ করেন।
শনিবার নির্যাতিত (আলোকে) মেডিকেল পরীক্ষা করার কথা রয়েছে, পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে সূত্র জানায়।