এম আবু হেনা সাগর, ঈদগাঁও :
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ের ডজনাধিক মার্কেটে ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে ক্রেতারা। বিশাল এলাকায় পানি বন্দী অবস্থায় দুর্বিসহ জীবন-যাপনের পরেও বন্যা দুর্গত লোকজনের মাঝে আসন্ন ঈদ কেনাকাটা থেমে নেই। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশার পরিবর্তে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। টানা সপ্তাহজুড়ে ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে গ্রামাঞ্চলের লোকজন হাবুডুবু খাচ্ছিল। এতে কারো পৌষ মাস ও কারো সর্বনাশে পরিণত হয়। এলাকা জুড়ে বন্যার পানিতে গ্রামীণ যাতায়াত সড়ক লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার পরেও ঈদের কেনাকাটায় ফের ব্যস্ত সময় পার করছে লোকজন। ২৯ জুন দুপুর বেলায় আজকের কক্সবাজারের এ প্রতিনিধি ঈদগাঁও বাজারের কয়েকটি মার্কেট ঘুরে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখতে পায়। পুরুষ ক্রেতাদের পাশাপাশি নারী ক্রেতার সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। জানা যায়, জেলা সদরের বহুল আলোচিত ঈদগাঁও বাজারের ব্যবসায়ীদের ভর মৌসুমেও রমজানের শুরুতে প্রচন্ড বৃষ্টিপাতের কারনে ক্রেতাহীন মার্কেটে পরিণত হলেও দশ রমজান পার হতে না হতেই ক্রেতাদের ভিড় আর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উল্লেখ্যযোগ্য হারে ক্রেতার সমাগম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা মহাখুশিতে উৎফুল্ল। যেন দুর্বিসহ জীবন যাপন করার পরেও দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা ক্রেতাদের দখলে ছিল মার্কেটগুলো। গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কারনে দুর-দূরান্তের অধিকাংশ ক্রেতাগণ এখনো ঈদের কেনাকাটা করা থেকে আটকা পড়েছে। আবার অনেকে পানি বন্দী অবস্থায় থাকার পরেও নিজের জন্য, ছেলে মেয়ে কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে মার্কেটে ছুটে আসতে দেখা যায়। ঈদগাঁও বাজারের নিউ মার্কেট, রহমানিয়া মার্কেট, শফি সুপার মার্কেট, বেদার মার্কেট, তাজ সুপার মার্কেট, মাতবর মার্কেট, জাপান মার্কেট, হাজী মার্কেট, মসজিদ মার্কেট, ফরাজী মার্কেট, কবিরাজ সিটি সেন্টার, নুর শপিং কমপ্লেক্স, বঙ্গ মার্কেট, ছকিনা মার্কেট, দারুল হেরা মার্কেটসহ বাজারের পশ্চিম গলি খ্যাত দোকান পাটে প্রতিযোগিতার ঈদ বাজারে হরেক রকম ডেকোরেশন আর আলোক সজ্জায় ভরপুর করে তুলেছে স্ব স্ব দোকানদাররা। যেন ক্রেতাদের চোখে পড়ে তাদের দোকান। এমনকি ঢাকা চট্টগ্রাম থেকে ক্রেতাদের পছন্দ মোতাবেক মালামাল তুলতেও পিছপা হয়নি দোকানদাররা। অন্যদিকে একই ধরণের মালামাল একেক দোকানে একের ধরণের দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছে দূর-দূরান্তের ক্রেতাগণ। অপরদিকে কিছু কিছু মার্কেটে ক্রেতাদের কাছ থেকে ঈদ কেনাকাটার সময় চড়া দাম নিচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেন ক্রেতারা। আবার ঈদগাঁওর মার্কেটগুলোর পাশাপাশি ফুটপাত ব্যবসাও ফের জমে উঠতে দেখা যায়। নানা ডিজাইনের কাপড় অল্প দামে বিক্রি হওয়ায় অসহায় ক্রেতাগণ ফুটপাতের দোকানমুখী হচ্ছে। তবে একাধিক ব্যবসায়ীর মতে, চলতি বর্ষা মৌসুমেও বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়নের গ্রামগঞ্জ থেকে ঈদ কেনাকাটায় ছুটে আসছে ক্রেতাগণ। এতে আমরা আনন্দিত। এখনো বিগত বছরের ন্যায় মার্কেটে তেমন ক্রেতার সমাগম ঘটেনি বলেও জানান অনেকে। আবার পোকখালী ও চৌফলদন্ডীর কয়েক পথচারীর সাথে এ প্রতিনিধি আলাপ হলে জানা যায়, এখনো তাদের বাড়িঘরে দুর্বিসহ অবস্থা। দেখা যাক আসন্ন ঈদের কেনাকাটা করতে পারি কিনা।