কক্সবাজার আলো ডেস্ক :
ঈদের ছুটি শেষ না হতেই জীবনের ছুটির ঘণ্টা বাজলো হাফেজ মো. শামসুদ্দোহার (১৬)। চোরের হাতুড়ির আঘাতে তাকে অকালেই চলে যেতে হলো না ফেরার দেশে। শামসুদ্দোহাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা-বাবাসহ স্বজনরা। শামসুদ্দোহার খালা হোসনেআরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ঈদের ছুটিতে শামসুদ্দোহা নানা বাড়ি বেড়াতে এসেছিলো। বেড়াতে এসে অনেক আনন্দ করেছে। এ ছুটি যে ওর জীবনের শেষ ছুটি হবে তা কেউ ভাবতে পারিনি।
তিনি বলেন, শামসুদ্দোহা পবিত্র ক্বোরআনের হাফেজ। সে মাহে রমজানে তারাবি নামাজের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। বটিয়াঘাটা উপজেলার নিজখামার এলাকার গোলাম জাহেদ রহমানের ছেলে শামসুদ্দোহা নড়াইলের কুরআনিক একাডেমিক নামের একটি মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। সেখানে থেকেই পড়ালেখা করতো।
মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) মুখপাত্র মনিরুজ্জামান মিঠু জানান, মঙ্গলবার মধ্য রাতে কয়েকজন চোর নগরীর ৭০/৩ নং রূপসা স্ট্যান্ড রোডের আব্দুল জব্বারের বাড়িতে চুরি করতে যায়। ওই সময় শব্দে ঘুমন্ত নাতি হাফেজ মো. শামসুদ্দোহা জেগে গেলে তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। তার চিৎকারে বাড়ির অন্যরা জেগে উঠলে তার নানী খাদিজা বেগম (৭০) ও গৃহ পরিচারিকা রাণীকেও (৪৫) বেধড়ক মারপিট করে চোরেরা পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় শামসুদ্দোহা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। দ্রæত তাকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে রাতেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই সে মারা যান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি ও ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকের অভিযান চলছে বলে জানান মিঠু।
খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাপষ কুমার পাল বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে।
তবে স্থানীয়রা বিষয়টি ডাকাত কর্তৃক সংগঠিত হয়েছে জানালেও পুলিশ চোর বলে দাবি করছে।
এদিকে খুলনায় একের পর এক চুরি ও ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত নগরবাসী। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে বাড়িঘরের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও বেড়েছে তাদের। ডাকাতির মামলাগুলো থানায় ‘চুরি’ হিসেবে রেকর্ড করা হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন ডাকাতরা বেপরোয়া হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।