এ.এম হোবাইব সজীব,চকরিয়া :
টানা ভারী বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীর পাহাড়ি ঢলের পানি সম্প্রতি লোকালয় থেকে নামতে শুরু করেছে। ফলে উন্নতির পথে কক্সবাজারের চকরিয়ার ১৮ ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি। তবে ঢেমুশিয়ায় এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার বদরখালী নিচু এলাকা গুলো কাঁদামাটি আর জলবদ্ধতার বন্দি হয়ে পড়েছে এখানকার ২’শতাধিক পরিবার। অপরদিকে ঢেমুশিয়া স্লুইচ গেইট বন্ধ থাকায় বানের পানি নামতে না পারায় এসব গ্রামের শুকনো জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। যার কারনে মানুষের দুরগতি এখনো শেষ হচ্ছে না। ফলে ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে বন্যদুর্গত এলাকায় রান্নার কাজ করতে পারছেনা হাজার পরিবার। কারো বাড়ির আশপাশ, কারো বাড়ির ভেতরে পানি আর পানি। এক কথায় কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশে পরিণত হয়েছে। বিগত এক সপ্তাহ ধরে এসব এলাকায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে বহু পরিবার। ডা: আলমগীর ডা: হেলাল উদ্দিন জানান, ঢেমুশিয়া , এলাকায় বহু পরিবার এখনো পানি বন্দী অথৈ জলে ভাসছে। থাকা-খাওয়া নিয়ে নিদারুন কষ্ট ভোগ করছে এক সপ্তাহ ধরে। বদরখালী থেকে পানি নেমে গেলে ও কাঁদা-মাটি আর জলবদ্ধতার কারনে রান্নার কাজ করতে নিদারুন কষ্ট পারছে ২’শতাধিক এর অধিক পরিবার বলে তারা জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া বদ্ধ জলমহালের স্লুইচ গেইট গুলো বন্ধ করে রাখার কারনে বর্তমানে ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা থেকে নামতে পারছেনা বানের পানি। এ অবস্থার কারনে গত কয়েকদিন ধরে এ ইউনিয়নের নিচু জায়গার হাজার পরিবার এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এলাকাবাসি অভিযোগ করেছেন, ঢেমুশিয়া জলমহাল কমিটির লোকজন মৎস্য চাষ রক্ষার জন্য স্লুইচ গেইট গুলো বন্ধ করে রেখেছে। ফলে টানা ভারী বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতোমধ্যে নেমে গেলেও ঢেমুশিয়া থেকে নামতে পারছেনা বানের পানি। বসতবাড়ির পাশাপাশি বর্তমানে কোমড় সমান পানিতে তলিয়ে রয়েছে ইউনিয়নের ফসলি জমি ও বিপুল পরিমাণ চিংড়ি ঘের এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন মৎস্য প্রকল্প।
জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঢেমুশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো.রোস্তম আলী বলেন, টানা ভারী বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে পাহাড়ি ঢল নামলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু বর্ষণ থেমে যাওয়ার পর প্রায় ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি থেকে মুক্ত হলেও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে। তিনি বলেন, ঢেমুশিয়া বদ্ধ জলমহালের স্লুইচ গেইট গুলো বন্ধ রাখার কারনে তার ইউনিয়নের লোকালয় থেকে বানের পানি নামতে পারছেনা। এ অবস্থায় এলাকার লোকজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তেক্ষেপ কামনা করেছেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম মুক্তবাণীকে বলেন, উপজেলার প্রায় ইউনিয়ন থেকে বন্যার পানি ইতোমধ্যে নেমে গেছে। ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে কি কারনে পানি বলবৎ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি পানিবন্দি হওয়ার ঘটনাটি জলমহালের কারনে হয়ে থাকে তাহলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।