এম আবু হেনা সাগর, ঈদগাঁও :
প্রচন্ড বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ী ঢলের পানিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওবাসী লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের জরাজীর্ণ সড়কগুলো বেহায় দশায় পরিণত হয়ে পড়েছে। যাতে করে বৃহত্তর এলাকায় শত শত মানুষজন পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগ আর দুর্গতিতে পড়েছে। সে সাথে যত্রতত্র স্থানে কর্দমাক্ত আর কর্দমাক্তে চেয়ে গেছে। এনিয়ে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ লোকজন দুর্বিসহ অবস্থায় জীবন যাপন করতে দেখা যাচেছ। জানা যায়, টানা ভারী বর্ষণে ঈদগাঁওর জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়ার পাশাপাশি বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা চৌফলদন্ডী, পোকখালী, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, ইসলামপুর ও ঈদগাঁওয়ের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে লোকজন পানিবন্দী হওং অসহায় অবস্থায় নিদারুন কষ্টে নিপতিত হয়েছে। এদিকে ঈদগাঁও বাজারের অধিকাংশ দোকানপাটে ঢলের পানি প্রবেশ করে লাখ লাখ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তাছাড়াও পোকখালীর নতুন রাবারড্যাম সংলগ্ন এলাকায় ভেঙ্গে পোকখালীর প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বসতবাড়ী পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে বলে জানান, রুবেল নামের এক যুবক। ঈদগাঁওয়ের পালপাড়া, চৌধুরী পাড়া, কুলাল পাড়া, ভাদিতলা, দরগাহ পাড়া, হাসিনা পাহাড়, মাইজপাড়া, বাজার এলাকা, কালিরছড়া, মাছুয়াখালী, মেহেরঘোনা, জালালাবাদের মোহনবিলা, তেলিপাড়া, জলদাস পাড়াসহ বহু গ্রাম প্লাবিত হয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। ঈদগাঁও মাইজপাড়ার ভরাখালটি বিগত বছর বিএডিসি কর্তৃপক্ষ খাল খননের মাঝপথে ফেলে চলে যাওয়ার কারনে বর্ষার পানি সুষ্ঠুভাবে যাতায়াত করতে না পারায় পার্শ্ববর্তী বাড়ীঘরে পানি প্রবেশ করেছে বলে মুঠোফোনে আজকের কক্সবাজারের এ প্রতিনিধিকে জানান স্থানীয় এমইউপি ছুরত আলম। এছাড়া ঈদগাঁও-ইসলামাবাদ যাতায়াতের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যমে বাঁশঘাটার ফুট ব্রীজটি দেবে যাওয়ার কারনে জন ও যানবাহন চালকরা চরম আতঙ্কে পড়েছে। যে কোন মুহুর্তে ঐ ব্রীজটি ভেঙ্গে প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেন স্থানীয় লোকজন। পোকখালী, গোমাতলীসহ ইসলামাবাদের বিভিন্ন এলাকার লোকজনের বাজারে আসার একমাত্র চলাচলের রাস্তা ছিল এ ব্রীজটি। কিন্তু বর্তমানে ভারী বর্ষণের ফলে এটি দেবে যাওয়ার কারনে বিশাল এলাকার লোকজন দুর্ভোগের চরম পর্যায়ে পড়েছে। অপরদিকে দরগাহ রোডের গাইড ওয়াল ত্রিভূজ ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দরগাহ পাড়া, ভাদিতলা ও হাসিনা পাহাড় এলাকার যোগাযোগ স¤পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। এদিকে মাইজপাড়া গ্রামাঞ্চলের রাস্তা ভেঙ্গে বৃহত্তর এলাকার যোগাযোগ ও বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থী আবু নাছির। পালপাড়াস্থ গরুর হালদা সড়কের পার্শ্ববর্তী ব্রীজের সাইট রাস্তা ভেঙ্গে চলাচল অযোগ্য বলে জানান এক ডাক্তার। ইসলামাবাদের পাহাশিয়াখালী, টেকপাড়া, সিকদার পাড়া সড়ক ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি ঘরবাড়ি ভেঙ্গেছে বলে জানান শিক্ষার্থী রাশেদ। পাশাপাশি পাহাড়ী ঢলের পানিতে ঈদগাঁওয়ের প্রধান যাতায়াতের সড়কটি পানিতে সয়লাব থাকায় চলাচল অযোগ্য হওয়ার পাশাপাশি লঙ্করঝঙ্কর মার্কা সড়কে পরিণত হয়ে পড়েছে। এ সড়ক দিয়ে ছোট বড় যানবাহন চলাচল ও দূর-দূরান্ত থেকে আগত লোকজনের চলাচল করতে দারুনভাবে হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যাতে করে ঈদগাঁও-ঈদগড়মুখী লোকজন যাতায়াতে দারুনভাবে বিপাকে পড়েছে। এদিকে ঈদগাঁও ভাদিতলা নির্মিত ব্রীজটি ঢলের পানিতে ভেঙ্গে যাওয়ায় শিয়া পাড়া, ভাদিতলা, দরগাহপাড়া, হাসিনা পাহাড় এলাকার প্রায় ১০ হাজারের অধিক লোকজন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সচেতন মহল বন্যা কবলিত এলাকায় দ্রুততম সময়ে ত্রাণ তৎপরতা আরো দ্বিগুণ আকারে বৃদ্ধি করার আহবান জানান উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের কাছে।