শনিবার , ১ আগস্ট ২০১৫ | ১১ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলাম
  7. এক্সক্লুসিভ
  8. কক্সবাজার
  9. করোনাভাইরাস
  10. খেলাধুলা
  11. জাতীয়
  12. জেলা-উপজেলা
  13. পর্যটন
  14. প্রবাস
  15. বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি

অনাহারে-অর্ধাহারে থাকায় মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছেনা কোলের শিশু !

প্রতিবেদক
কক্সবাজার আলো
আগস্ট ১, ২০১৫ ১০:৩৬ অপরাহ্ণ

সেলীনা হোসাইন সেলী, পেকুয়া থেকে ॥Pekua Pic 01-08-15 (1)
পেকুয়া সদর ইউনিয়নের টেকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাদশা মিয়া ও তার পরিবার। বিগত ২৫জুলাই রাত থেকে ১আগষ্ট পর্যন্ত আটদিন যাবত বন্যার পানিতে বসত-ঘর ডুবে যাওয়ায় অবস্থান নিয়েছে তাদের ঘরের চালের নিচের মাচাঁয়। প্রথম পাঁচদিন চুলায় আগুন জালাতে পারলেও পরবর্তী তিনদিন ধরে তিনি পুরো পরিবার নিয়ে আছেন উপুস ! কারণ তার চারদিকে পানির সাগর। বের হবার মত কোন রাস্তা নেই তার। একপ্রকার বাধ্য হয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনানিপাত করছে তার পরিবার। একইভাবে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ১০টিরও অধিক গ্রামের মানুষ।
আরো ভয়াবহ তথ্য জানালেন পশ্চিম মেহেরনামা নন্দীরপাড়া এলাকার প্রসুতি মা মর্জিনা খাতুন, অনাহারে-অর্ধাহারে থাকায় ঠিকমত বুকের দুধ পাচ্ছে না তার ৩মাস বয়সী কোলের শিশু।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানি অরক্ষিত ভাঙ্গা বেড়ীবাধ দিয়ে প্রবেশের ফলে এক মাসের ব্যবধানে ফের পেকুয়া সদর, শীলখালী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের কয়েক হাজার ঘরবাড়ী বিগত ৭দিন যাবত পানির নীচে ডুবে আছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে জো’এর জোয়ারে পানি বেড়েছে ৬-৭ ফুট। এতে, কমপক্ষে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
জুন মাসের শেষের দিকের বন্যার ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের বন্যায় প্লবিত হয়েছে কক্সবাজারের উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়া। কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরী নদীর পানি বেড়ীবাধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে ক্রমাগত ঢুকে প্লাবিত হওয়ায় ঘর-বাড়ি ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে এলাকার মানুষ। দুই-তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে বন্যা দূর্গত মানুষ। বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে একমাস আগের বন্যার সময় আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা সংস্কার না করায় দুর্গন্ধ ও অপিরচ্ছন্ন পরিবেশেই আশ্রয় নিতে হয়েছে বন্যার্ত লোকজনের। অধিকাংশ নলকূপ পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
দূর্গত স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগের সাথে জানান, প্রথম বারের বন্যার পর যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা এবং দায়িত্বহীনতার কারণে ২য় দফায় ফের বন্যার কবলে পড়লো পেকুয়াবাসী। একইসাথে মাশুল গুননো বারবাকিয়া ও শীলখালীবাসী। তারা দ্রুত বেড়ীবাধের ভাঙ্গা অংশ সংস্কার ও আরো অধিক ত্রাণ বিতরণের দাবি জানান।
পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ বলেন, আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এই পর্যন্ত প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। গত দুইদিন যাবত আমরা দূর্গতদের মাঝে তৈরী খাবারও (খিচুড়ি) বিতরণ করেছি। ২আগস্ট প্রায় দুই হাজার মানুষের মধ্যে বিরিয়ানী বিতরণ করা হবে। একইসাথে উপজেলা প্রশাসন প্রদত্ত ত্রাণও নিয়মিত পৌছে দেয়া হচ্ছে বানবাসীদের মাঝে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খান বলেন, পেকুয়ার বন্যা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। পেকুয়া সদর সম্পুর্ণ এবং শিলখালী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের একাংশের অধিকাংশ ঘরবাড়ী পানির নীচে তলিয়ে আছে উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে পেকুয়ায় ফের বন্যা হলো। এরপরও উপজেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্বিক কার্যক্রম ও ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। খুবশীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। চলমান ২য় দফার বন্যায় বিতরণকৃত ত্রাণের পরিমান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, এই পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৬০বস্তা চিড়া, ৮০মণ গুড়, ৩৩টন চাল, ২৮০বস্তা মুড়ি ও প্রয়োজনমত খাবার স্যালাইন এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ওষধ বিতরণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ - কক্সবাজার

https://coxsbazaralo.com/