শফিক আজাদ, উখিয়া :
সম্প্রতি কক্সবাজারের কিছু স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইনে উখিয়া এলজিইডি অফিস দুর্নীতির আখঁড়ায় পরিনত সংবাদ প্রকাশিত হলে টনকনড়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের। যার ফলে উখিয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিসে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহারাব আলী এবং হিসাব সহকারী বাবলা মহাজন তদন্ত ধামাচাপা দিতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে গোপন সুত্রে জানা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, এ দুই জন মিলে এলজিইডি অফিসে ক্ষমতার অপব্যবহার, কমিশন আদায় ও ঘুষ বাণিজ্যে বেপরোয়ারা হয়ে উঠেছে। উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে কমিশনের টাকা আদায়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বিশেষ করে বিতর্কিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: সোহারাব আলীর ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যের দৈনিক ইনানী সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে উর্ধ্বতন সংশ্লি কর্তৃপক্ষ তদন্তে নেমেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সুত্রে নিশ্চিত করেছে। ভূক্তভোগী ঠিকাদারগণ এবং জনপ্রতিনিধিরা অবিলম্বে দূর্নীতিবাজ উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কবল থেকে রক্ষা করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, উখিয়া এলজিইডি অফিসে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে মো: সোহারাব আলী বিগত ২বছর পূর্বে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে নিজেকে বড় মানের প্রকৌশলী দাবী করে উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের নিয়োজিত ঠিকাদারকে কথায় কথায় ধমক ও বিল বন্ধ বা ফাইল আটকানোর মধ্যে দিয়ে তার প্রতান্ড দাপট দেখায়। অবশেষে উপায়ন্ত না দেখে এই দাপটি অফিসারের সাথে আপোষ রফা শুরু করে ঠিকাদারগণ। উক্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী দূর্নীতিবাজ ও বির্তকিত মো: সোহারাব আলী অফিসে একছত্র প্রধান্য বিস্তার করে হিসাব সহকারী বাবলা মহাজনের মাধ্যমে ঘুষ বানিজ্য ও কমিশনের টাকা আদায়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের কোটি কোটি টাকার নবনির্মিত পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, রবার ড্যাম স্থাপন, কারপেটিং রাস্তা, ব্রিজ কালভার্ড, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বমুখি সম্প্রসারন ভবন এডিবিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের তদারকি দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার হিসাবে ব্যাপক উৎকোচ আদায়ে নেমেপড়ে। সরকারী সিডিউল অমান্য করে ঠিকাদারগণ অনিয়ম ও দূর্নীতি মাধ্যমে নির্মাণ কাজ চালিয়ে গেলেও উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কমিশনের টাকায় পকেট ভরে যায়। কারণ তিনি কমিশনের টাকা পেলেই সকল প্রকার অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়মে পরিনত হয়। এদিকে গত ২৪ আগস্ট দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হলে কক্সবাজার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বিষয়টি নজরে এনে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। এলজিইডির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সর্বশেষ জানা যায়, অতি সম্প্রতি উপজেলী প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ বদলী হয়ে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় চলেগেলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে দূর্নীতিবাজ এই বির্তকিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী। বলতে গেলে তিনি একাই একশ। কমিশন ও উৎকোচের টাকা পেলেই যে কোন প্রকল্পের ফাইল স্বাক্ষর করে দেয় তিনি। আর যারা ঘুষের টাকা দিতে অনিহা করে তাদের ফাইল আটকিয়ে রাখা হয়। নিজেকে বড় মানের কর্তা দাবী করে পুরো এলজিইডি অফিসকে জিম্মি করে রেখেছে। তার অনৈতিক হস্তক্ষেপ ও দৌরাত্বের কারণে অফিসের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক ঠিকাদার জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: সোহারাব আলীর নিকট আমরা জিম্মি। উখিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন এ অফিসারেরে কাছ থেকে সংবাদ পত্রের জন্য তথ্য চাওয়া হলে অসৌজন্য আচরন করে। তথ্য না দিয়ে উল্টো সংবাদ পত্র ও গণমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে বিষেগারসহ নানা মন্তব্য করতে দেখা যায়। সুশীল সমাজের মতে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগ থাকার পরও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে উখিয়ার কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ ভেস্তে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: সোহরাব আলী বলেন, কর্তৃপক্ষের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করছি। কোন ঠিকাদারের নিকট হতে কমিশন আদায় ও দূর্ব্যবহারে অভিযোগ সত্য নয়। এটা কেবল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। সচেতন মহল উখিয়া এলজিইডি দূনীতি মুক্ত করার জন্য অবিলম্বে এই বিতর্কিত কর্মকর্তাকে অবিলম্বে বদলী করার জন্য জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর আলম সিদ্দিকীর নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।