রবিবার , ৯ আগস্ট ২০১৫ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলাম
  7. এক্সক্লুসিভ
  8. কক্সবাজার
  9. করোনাভাইরাস
  10. খেলাধুলা
  11. জাতীয়
  12. জেলা-উপজেলা
  13. পর্যটন
  14. প্রবাস
  15. বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি

টেকনাফের ফিরোজ বাহিনী ফের বেপারোয়া : ২ টি ফিশিং বোটে ডাকাতি

প্রতিবেদক
কক্সবাজার আলো
আগস্ট ৯, ২০১৫ ৮:৫১ অপরাহ্ণ

বিশেষ প্রতিবেদক :
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট কেন্দ্রিক ফিরোজ বাহিনীর দস্যুতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার বাহিনীর হাতে সাগরে মাঝিমাল্লারা প্রতিনিয়ত হামলার শিকার ও ডাকাতিসহ বিভিন্নভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
সুত্রে জানা যায়, গত ৬ আগষ্ট প্রতিদিনের ন্যায় বাহারছড়া ঘাট দিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায় সৌদি প্রবাসী নুরুল আলম কোম্পানীর মালিকানাধীন মমতাজ মাঝির ফিশিং বোট। যাওয়ার পরে সেদিন ভোর রাত ৪টার দিকে দুইটি বোট তাদের গতিরোধ করে আক্রমন করে এবং তাদের তিনটি জালসহ বিভিন্ন মালামাল ডাকাটি করে নিয়ে যায়। এসময় পার্শ্ববর্তী আরেকটি ফিশিং বোট এসে লোকজন চিৎকার করে ডাক দেয় নুরুল আলম কোম্পানীর মাঝি আবদুল হক কে কি হয়েছে বলে। তখন তাদের সকলের সন্দেহ হয় ডাকাতিকাজে ব্যবহ্নত বোটগুলি ফিরোজ বাহিনীর প্রধান ফিরোজের মালিকানাধীন বোট।  পরে সবাই ঘাটে চলে গিয়ে কোম্পানীর পিতাকে অবহিত করে। ঘটনা জানার পর সে বলে, ফিরোজ বাহিনীর ফিরোজের সাথে দেখা করতে বললে পরে ফিরোজের কাছে গেলে বোটের জালগুলো ফেরত দিতে বললে তাদেরকে ফিরোজ বাহিনীর প্রধান ফিরোজ গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
এব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ বোট মালিকের পিতা জহির আহমদ জানান, ফিরোজ বাহিনী বর্তমানে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়া বাহারছড়া এলাকার বিভিন্ন ঘাটে বোটের ব্যবসা করলে বাড়াবাড়ি না করে চুপ করে বসে থাকার হুমকিও প্রদান করে। অন্যথায় সবকিছু হারিয়ে ফেলবে বলে সাফ জানিয়ে দেয় ফিরোজ।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার উপকূলীয় এলাকার ত্রাস, ভূমিদস্যু, জলদস্যু, মানব পাচারকারী, ইয়াবা ও তেল পাচারকারী ফিরোজ এবার তার বাহিনী দিয়ে সাগরে দ্বিগুন হারে দস্যুতা করে যাচ্ছে। মূলত তিনি প্রশাসনের তালিকাভুক্ত মানব পাচারকারী দলের সক্রিয় সদস্য। বর্তমানে সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী প্রশাসন জিরু টলারেন্স হিসেবে সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় সেই অনেকটা আতœগোপনে ছিল এই ফিরোজ বাহিনীর প্রধান ফিরোজ। এই কারনে সেই বর্তমানে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ফিরোজ দিশেহারা হয়ে সাগরে দস্যুতা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার লোকজন ও স্থানীয় মাঝিমাল্লারা জানান, টেকনাফের সমস্ত উপকূলীয় এলাকার সাগরে এমন কোন অপরাধমূলক কাজ নেই ফিরোজ বাহিনী করেনা। তার বাহিনীর হাতে সমস্ত মাঝিমাল্লারা জীম্মি হয়ে পড়েছে। তাদের বিরোদ্ধে কেউ মুখ খুললে তাদের উপর চালায় অমানবিক নির্যাতন ও ডাকাতি। আবার ফিরোজ বাহিনীর লোজকন চুক্তি করে সাগর পথে ইয়াবা কক্সবাজার, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও আনোয়ারাসহ দক্ষিন চট্টগ্রামের যে কোন জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা সাগর পথে ইয়াবা পাচার করে চলে আসার সময় সাগরে ফিশিং বোট থেকে জাল-মাছ ডাকাতি করে নিয়ে আসে। বিশেষ করে ফিরোজ বাহিনীর আপন ভাগিনা আবদুল হক তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সুত্রে আরো জানা গেছে, দস্যু ফিরোজ এর পিতা মৃত আবদুল মোনাফ সাগরে দস্যুতা করার সময় মারামারি করে মৃত্যু বরন করেন। তারা টেকনাফের সাবরাং ফতেআলী পাড়ায় কয়েক বছর আগেও দিনমজুর করে ও ক্ষেত খামার করে কোনরকম দিনাতিপাত করত। এরপর ফিরোজ বাহিনীর লোকজন দিয়ে প্রথমে বাহারছড়া ঘাটে ডিজেল বিক্রি করে সংসার চালাত। কিন্তু হঠাৎ করে মায়ানমারে ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাবেক এক জনপ্রতিনিধির হাত ধরে তেল পাচারে জড়িয়ে পড়ে। আর আজ থেকেও ৫/৬ বছর আগে মানব পাচার শুরু হলে, ঘাট এলাকায় নিয়মিত অবস্থানের কারণে সরকার দলীয় এক নেতার আনুকুল্যে সহজেই মানব পাচার নিজের নিয়ন্ত্রনে সমস্ত কিছু পরিচালনা করে।  পরে এসব অপরাধমুলক কর্মকান্ড নিয়ে তারা অপ্রতিরোদ্ধ হয়ে ওঠে। তাদের বিরোদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তার উপর নেমে আসে চরম নির্যাতন। এভাবে সামান্য দিনমজুর থেকে কোটিপতি বনে যায় এই ডাকাত ফিরোজ বাহিনীর প্রধান ফিরোজ। বর্তমানে তার রয়েছে তিনটি বোট, বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি ও জায়গা সম্পত্তি। সাম্প্রতিককালে তার বিরোদ্ধে ভূমিদস্যুতার প্রতিবাদ করায় সাবরাং কুরাবুইজ্যা পাড়ার মুক্তার আহমদের ছেলে রহিম উল্লাহর হাতের তিনটি আংগুল কেটে নেয় এই ফিরোজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার সচেতন মহল জানান, ফিরোজ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে এলাকা ছাড়া হয়ে টেকনাফ ত্যাগ করতে হয়। তারা আরো জানান, সম্প্রতি হামলায় রহিম উল্লাহর আংগুল কেটে নেওয়ার পর থানায় মামলা হলেও এজাহারভুক্ত আসামীরা ফিরোজের সাথে সাগরে দস্যুতায় নেমে যায়। যার ফলে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এলাকার লোকজন আরো জানিয়েছেন, ফিরোজ বাহিনীর লোকজন আবার সংঘঠিত হয়ে এলাকায় যেকোন মুহুর্তে আরো বড় ধরনের সংঘর্ষ এমনকি প্রানহানির মত ঘটনা ঘটাতে পারে।
এলাকাবাসীর জোর দাবি, চিহ্নিত ভুমিদস্যু, জলদস্যু, মানবপাচার ও ইয়াবা ব্যবসায়ী ফিরোজকে গ্রেফতার পুর্বক আইনের আওতায় আনলে এলাকার শান্তি শৃংখলা ও তাদের জীম্মিদশা থেকে মুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার জানান, ফিরোজ বাহিনীর বিরোদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে তাকেসহ তার বাহিনীর লোকজনকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ - কক্সবাজার

https://coxsbazaralo.com/