নিজস্ব প্রতিবেদক, পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা লঞ্চঘাট এলাকায় নির্মানাধীন স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন পাউবো’র পরিদর্শক। এসময় স্থাপনাটি পাউবোর অধিগ্রহনকৃত জায়গায় নয় জানিয়ে নিষ্কন্ঠক ঘোষনা করেন পরিদর্শক। জানা যায়, গত ৮৯সালে স্থানীয় হাজি¦ মরহুম হেদায়েতুর রহমানের পুত্র হাজি¦ জাহাঙ্গীর আলম, আলহাজ¦ এডভোকেট মুহাম্মদ ইলিয়াছ, হাজি¦ মুহাম্মদ তৈয়ব, মুহাম্মদ আবু তালেব ও আবু তাহের গং একই এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার পুত্র মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে উপজেলার মগনামা মৌজার ১০৪৭, ১২৭০ ও ১২৭১দাগাদির আন্দর ১৪গন্ডা জায়গা খরিদ করেন। দীর্ঘ ১৫/২০বছর ধরে ওই স্বত্ব তারা শান্তিপূর্ণ ভোগদখলেও রয়েছেন। সম্প্রতি ওই জায়গার উপর বিদ্যমান দোকানঘরগুলো জরাজীর্ণ হলে তার সংষ্কারের প্রস্তুতি নেয় স্বত্বের মালিক। এসময় জায়গার মালিক আবু তাহের গং স্থাপনা নির্মাণের সরঞ্জামাদিও সেখানে স্তুপের মাধ্যমে স্থাপনা নির্মানের কাজ শুরু করেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে স্থানীয় রেজাউল করিম, ফজল করিম ও ইব্রাহিমের নেতৃত্বে ১টি কু’চক্রী মহল ওই জায়গাটি তাদের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে জায়গার মালিকদের জড়িয়ে বেপরোয়া মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ান। এক পর্যায়ে ঘটনায় জড়িতরা পাউবো’র জায়গায় আবু তাহের গংয়ের অবৈধ স্থাপনা গড়ার গুজব গুঞ্জন ছড়িয়ে আবু তাহেরের মালিকানাধীন স্বত্বে স্থাপনা নির্মানে বাঁধ সাধেন। তারই জের ধরে গত ২৬আগষ্ট স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইউএনও মোঃ মারুফুর রশিদ খান সরোজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি স্বত্বের দালিলীক কাগজপত্র ও স্থাপনা নির্মাণের বৈধতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় স্বাক্ষী নিয়ে তার কার্যালয়ে হাজির হয়ে উপস্থাপনের মাধ্যমে স্বত্ব নিষ্কন্ঠক ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত স্থাপনা নির্মান কাজ বন্ধ রাখার নির্দ্দেশ দিয়ে সেখান থেকে ফিরে আসেন। এনিয়ে অভিযোগ উঠে যে, ইউএনও ঘটনাস্থল থেকে ফিরে যাওয়ার পর পরই স্থানীয় কু’চক্রী একটি মহল লোকজন লেলিয়ে দিয়ে মগনামা লঞ্চঘাট এলাকায় আবু তাহেরের মালিকানাধীন নির্মীয়মান স্থাপনায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও ব্যাপক লুঠপাট চালান। অপরদিকে, বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভুগী স্থাপনার মালিক আবু তাহের গং পানি উন্নয়ন বোর্ড-কক্সবাজার কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিত আর্জি পেশ করলে পাউবো কর্তৃপক্ষ পরিদর্শক ২৮আগষ্ট শুক্রবার সরোজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। নির্ধারিত ২৮আগষ্ট পাউবো’র কক্সবাজার পরিদর্শক (এস.ও)মোঃ নাছির উদ্দিন মগনামা লঞ্চঘাট এলাকায় আবু তাহের গংয়ের নির্মানাধীন স্থাপনাস্থল সরোজমিন পরিদর্শন ও পরিমাপ করে আবু তাহের গংয়ের জায়গা নিষ্কন্ঠক ঘোষনা দিয়ে পাশ^বর্তী রেজাউল করিম, ফজল করিম গংয়ের দখলীয় জায়গায়ও আবু তাহের গংয়ের কিছু পরিমান স্বত্ব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। ভুক্তভুগী স্বত্ব মালিক আবু তাহের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্থানীয় রেজাউল করিম, ফজল করিম ও ইব্রাহিম গংরাই পাউবো’র বেড়িবাঁধের জায়গা জবর দখল করে অবৈধ ভাবে দোকানপাট বসিয়ে রাতদিন সেখানে সিনেমা প্রদর্শন ব্যবসা চালিয়ে এলাকার লোকজনদের বিপদগামী করার পাশাপাশি স্থানীয় চিহ্নিত চোর ও সমাজবিরোধী লোকজনদের তাদের দোকানের মধ্যে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে এলাকাবাসীকে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রেখেছেন। আর এঘটনার বিরোধীতা প্রতিবাদ করায় অভিযুক্ত রেজাউল করিম, ফজল করিম ও ইব্রাহিম গং এলাকার লোকজনের কাছে সহজ সরল হিসাবে পরিচিত আবু তাহের গংয়ের খরিদা সূত্রের মালিকানাধীন জায়গায় স্থাপনা নির্মাণে অহেতুক বাঁধা দিচ্ছেন মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, পাউবো’র পরিদর্শক ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে তার স্বত্বের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, পাউবো’র পরিদর্শক ফিরে যাওয়ার পর থেকে তার মগনামা লঞ্চঘাট ষ্টেশনের নির্মানাধীন স্থাপনার সামনের খালি জায়গায় ফজল করিম রেজাউল করিম গং উস্কানী মুলক ভাবে বাঁশ খুটি ঘেরা বেড়া দিয়ে জবর দখল চেষ্টায় মেতে উঠেছেন। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, বিরোধীয় জায়গাটি এড. আবু তাহের গংয়ের খরিদা সূত্রের মালিকানাধীন। দীর্ঘ ১৫/২০বছর যাবত ওই জায়গাটি তারা শান্তিপূর্ণ ভোগদখলেও রয়েছেন। সুযোগ সন্ধানী সুবিধাবাদী মহল অহেতুক আবু তাহের গংয়ের স্বত্বে স্থাপনা নির্মাণে বাঁধা দিয়ে ফাঁয়দা হাশিলের চেষ্টায় রয়েছেন মাত্র। এ বিষয়ে পাউবো’র পরিদর্শক কর্মকর্তা নাছির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে, তিনি পরিদর্শনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থাপনা নির্মাণস্থলে পাউবোর কোন অধিগ্রহনকৃত স্বত্ব নাই। এবিষয়ে দু’য়েকদিনের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে দাখিল করা হবে। অন্যদিকে, আজ ৩০আগষ্ট বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউএনও কার্যালয়ে বিরোধীয় দু’পক্ষের মধ্যে শালিষী বৈঠকের দিনক্ষণ রয়েছে বলে জানান ভুক্তভুগী আবু তাহের গং। পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মারুফুর রশিদ খান বিরোধীয় দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।