সোমবার , ৩ আগস্ট ২০১৫ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলাম
  7. এক্সক্লুসিভ
  8. কক্সবাজার
  9. করোনাভাইরাস
  10. খেলাধুলা
  11. জাতীয়
  12. জেলা-উপজেলা
  13. পর্যটন
  14. প্রবাস
  15. বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি

প্রাণহানির আরেক কারণ মানহীন সড়ক

প্রতিবেদক
কক্সবাজার আলো
আগস্ট ৩, ২০১৫ ৩:০২ পূর্বাহ্ণ

দেশের প্রধান জাতীয় মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২৬৪ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত এটি চার লেন হয়েছে। তারপর থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেট পর্যন্ত ১৯২ কিলোমিটারের সব অংশ প্রশস্ত নয়। বাঁকে বাঁকে চলতে চলতে সতর্ক হয়ে পার হতে হয় ২৫টি সরু সেতু। এ মহাসড়কের ১৯২ কিলোমিটার দুই লেন থেকে চার লেন করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ১০ বছর আগে। এখনো কাজ শেষ হয়নি। এই এক মহাসড়কেই আছে ৩৮টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান বা ব্ল্যাক স্পট। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ যাত্রাবাড়ী, শিমরাইল, সোনারগাঁ, গৌরীপুর, দাউদকান্দি, কুমিল্লার বিশ্বরোড, শাহরাস্তি, ফেনী ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। নারায়ণগঞ্জ রোড ইন্টারসেকশনে মাত্র আধা কিলোমিটারেই বছরে ঘটছে গড়ে ৫৫টি দুর্ঘটনা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ, সওজ অধিদপ্তর, দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সওজ সূত্রে জানা যায়, দেশের ১৮টি জাতীয় মহাসড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান আছে ২২৭টি। সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ শতাংশই ঘটছে এসব স্থানে। ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট ব্র্যাক-পিপিআরসির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ- এই পাঁচ জেলায়ই দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটার। দুর্ঘটনার ৪০.৯০ শতাংশ ঘটছে বাসস্ট্যান্ডে আর ২৮.৪০ শতাংশ ঘটছে বাজার এলাকায়।

0প্রাণহানির আরেক কারণ মানহীন সড়ক

বাংলাদেশ সেতু বিভাগের হিসাবে দিনে গড়ে ১২ হাজার গাড়ি চলছে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে। কিন্তু সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের ২২ কিলোমিটার অংশ যেন মৃত্যু উপত্যকায় রূপ নিয়েছে। দেড় দশকে এখানেই প্রাণহানি ঘটেছে ৪৪০ জনের। গত সাত মাসের ব্যবধানে এ অংশে ৩৬টি দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৭৬ জনের প্রাণ গেছে। গত ১৯ জুলাই এক দুর্ঘটনায়ই ১৭ জনের মৃত্যু ঘটে। দুই লেনের অপ্রশস্ত সড়কে বাইলেন না থাকায় অদক্ষ চালকরা গতিসীমা না মেনে চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। মুলিবাড়ি, কাশেম মোড়, বানিয়াগাতী, কোনাবাড়ি, কড্ডা এসব স্থানে সতর্কবার্তাও টানানো নেই। গত ২১ জুলাই পরিদর্শনে গিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কটি চার লেন করার ঘোষণা দিয়েছেন। দুই মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত চারটি স্থানে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আদলে নিউ জার্সি ব্যারিয়ার নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার পথে ২২টি বাঁক ছিল। ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মহাসড়কের জোকায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় স্বনামধন্য চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মিশুক মুনীর মারা যান। তখন জনমত তৈরি হলে বাঁক প্রশস্ত করা ছাড়াও অনেক স্থানে তা সোজা করা ও বিভাজক বসানো হয়। এতে করে এই মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমে গেছে। কিন্তু বাকি ১৭টি মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমানোর পদক্ষেপ প্রতিশ্রুতি ও প্রক্রিয়াতেই ঝুলে আছে।

ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি আবুল কালাম কালের কণ্ঠকে বলেন, রাস্তাঘাট ভাঙা থাকায় ৭৫ লাখ থেকে কোটি টাকা দামের বাস ও মিনিবাসের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। চলাচলের উপযোগিতা হারাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। গত ঈদ মৌসুমে শতকরা ৫০ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে রাস্তার দুরবস্থায় গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে। কারণ খালি চোখে রাস্তা ভালো দেখা গেছে, রাস্তা ছিল এবড়ো খেবড়ো, গর্তও ছিল বিভিন্ন স্থানে।

সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ফিরোজ ইকবাল কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রতিবছর পানি জমে বিটুমিনের রাস্তা মান হারাচ্ছে। বেশি ওজনবাহী গাড়ি চলাচলের কারণে ১০ বছরের আয়ুষ্কালের রাস্তা আগেই নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মহাসড়কে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে।

বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, দুর্ঘটনার যাবতীয় আয়োজন রয়েছে আমাদের মহাসড়কগুলোয়। বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের ৫৪ কিলোমিটারে সার্ভিস লেন থাকলেও সেখানে একাধিক ব্ল্যাক স্পট আছে।

২২৭ ব্ল্যাক স্পট : সওজ অধিদপ্তরে গিয়ে জানা গেছে, ২২৭টির মধ্যে ১৪৪টি স্থানে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে অধিদপ্তর ১৬৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রকল্পটি একনেকের সভায় অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ৫৭ কিলোমিটারের মধ্যে প্রকল্পের আওতায় ২৮ কিলোমিটারের উন্নয়ন করা হবে। বাকি ৮৩টি স্থানে ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি। ২০১০ সালে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) মহাসড়কগুলোয় ২০৯টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান চিহ্নিত করেছিল। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় আরো ১৮টি এ রকম স্থান চিহ্নিত করে।

দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার ৩৫ শতাংশই ঘটছে মহাসড়কের ৪ শতাংশ স্থানে। এগুলোই ব্ল্যাক স্পট হিসেবে চিহ্নিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৮টি ছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৩৫টি, গাজীপুর-টাঙ্গাইল ও জামালপুর মহাসড়কে ১৪টি, নগরবাড়ী-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে ২৪টি, নগরবাড়ী-রাজশাহী মহাসড়কে ২৪টি, দৌলতদিয়া-ঝিনাইদহ-খুলনা মহাসড়কে ১৬টি, ঢাকা-মাওয়া-বরিশাল মহাসড়কে চারটি, বঙ্গবন্ধু সেতু সংযোগ সড়কে আটটি ব্ল্যাক স্পট আছে। এসব মহাসড়ক ছাড়াও দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান আরো আছে। এসব স্থানে সড়ক কোথাও বাঁকা, কোথাও বিভাজক নেই। সব স্থানে সড়ক চিহ্নও নেই। নেই পথচারী পারাপারের ব্যবস্থাও। প্রকল্পের আওতায় এসব ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।

কয়েক দিন আগে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মাস্টারবাড়ি, সালনা, ইপসা, রাজেন্দ্রপুর, ভালুকা অংশেই দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান রয়েছে ১০টি। বিভিন্ন স্থানে সড়ক চিহ্নও নেই। ঢাকা থেকে ১২০ কিলোমিটার পেরোলেই ময়মনসিংহ শহরে ঢোকা যায়। তার মধ্যে ঢাকা থেকে জয়দেবপুর অংশেই আছে সাতটি ব্ল্যাক স্পট। তার মধ্যে ভালুকা অংশে পিচের অংশ মাছবাহী ট্রাকের পানিতে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে থাকে। মহাসড়কের ৮৭ কিলোমিটারের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটার চার লেন করা হয়েছে। জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ভালুকাসহ চারটি অংশে বাকি ১২ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়নি। ভালুকার ভরাডোবা বাজার ছাড়াও টঙ্গীর বোর্ডবাজার, সিডস্টোর, ২৬ কিলোমিটার পোস্ট, গফরগাঁও ইন্টারসেকশন, গিলারচালা বাজার, পোড়াবাড়ী বাজার, ময়মনসিংহ পলিটেকনিক, টঙ্গী মার্কেট, টঙ্গী স্টেশন রোড- এসব স্থান ব্ল্যাক স্পট হিসেবে চিহ্নিত।

৭৩ শতাংশ মহাসড়ক মানহীন : বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়কগুলোর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মহাসড়ক। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চেয়ে কম গাড়ি চলাচল করলেও এই মহাসড়কে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দুর্ঘটনাপ্রবণ মহাসড়কের চেয়ে ১০ গুণ বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশ্বব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস প্রতিবেদন-২০১৫ থেকে জানা গেছে, সড়ক অবকাঠামোর মানের দিক থেকে এশিয়ার সব দেশগুলোর নিচে বাংলাদেশের অবস্থান। বিশ্বের ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আছে ১০৯তম স্থানে। সড়ক অবকাঠামো সূচকে ১০-এর মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ২ দশমিক ৯, ভারতের ৩ দশমিক ৮, চীনের ৪ দশমিক ৬, কম্বোডিয়ার ৩ দশমিক ৪, পাকিস্তানের ৩ দশমিক ৮। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কার স্কোর ৫ দশমিক ১ ও থাইল্যান্ডের ৪ দশমিক ৫।

দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বা সাসেক রোড করিডরের তিনটি রুট গেছে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে। রুট তিনটির দৈর্ঘ্য এক হাজার ৪৮১ কিলোমিটার। সওজের সমীক্ষা অনুযায়ী, এর মধ্যে এক হাজার ৩১৮ কিলোমিটার বা ৮৯ শতাংশই নিম্নমানের।

গত বছর প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির কারিগরি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সওজ অধিদপ্তরের মহাসড়কের ৭৩ শতাংশই মানহীন। আন্তর্জাতিক সড়ক সমীক্ষা কর্মসূচির আওতায় প্রত্যক্ষ জরিপে উঠে এসেছে এই চিত্র। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোকে মানের ক্রমানুসারে পাঁচ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাসড়কের ৪৫ শতাংশ পঞ্চম ক্যাটাগরির। এসব মহাসড়ক কালো তালিকাভুক্ত। কোনো হিসাবেই এগুলো মহাসড়কের মধ্যে পড়ে না। চতুর্থ ক্যাটাগরিতে আছে ২৮ শতাংশ। এগুলো লাল তালিকাভুক্ত। মানদণ্ডের খুব কম বৈশিষ্ট্য আছে এগুলোয়। এই ৭৩ শতাংশ সড়ক-মহাসড়কই মানহীন। বাকি ২৬ শতাংশ মাঝারি মানের উল্লেখ করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কমলা তালিকায়। মোটামুটি আদর্শ মানের মহাসড়ক মাত্র ১ শতাংশ উল্লেখ করে হলুদ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে আদর্শ মহাসড়ক পাঁচ তারকা বা সবুজ তালিকাভুক্ত। এ হিসাবে দেশে আন্তর্জাতিক মানের আদর্শ সড়ক-মহাসড়ক নেই। একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৮৭ শতাংশই নিম্নমানের। এর মধ্যে ৭২ শতাংশ কালো তালিকাভুক্ত। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৪৪ শতাংশ, জয়দেবপুর-জামালপুর মহাসড়কের ৬০ শতাংশ, জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গার ৫৭ শতাংশ, ঢাকা-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের ৭৬ শতাংশ, কাশিনাথপুর-রাজশাহী মহাসড়কের ৮১ শতাংশ, দৌলতদিয়া-মংলা মহাসড়কের ৭৫ শতাংশ ও ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়কের ৮২ শতাংশ নিম্নমানের।

দেশের ৯৬ শতাংশ মহাসড়ক দুই লেনের। এগুলোয় সড়ক বিভাজক নেই। তবে ৭৭ শতাংশ মহাসড়কে বিভাজক চিহ্ন আছে। আর ১ শতাংশ মহাসড়কের দুই পাশে নিরাপত্তামূলক বেষ্টনী রয়েছে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন- ইউএন-এসকাপ এশীয় মহাসড়কভুক্ত ৩২টি দেশের বর্তমান সড়কচিত্র বিষয়ে গত ১৯ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশে এশীয় মহাসড়কের জন্য চিহ্নিত এক হাজার ৭৬০ কিলোমিটারের মধ্যে মাত্র ৩১১ কিলোমিটার প্রথম শ্রেণির। ৭২ কিলোমিটার চার লেন। ৮৯ শতাংশ বা এক হাজার ৫৫৩ কিলোমিটার দুই লেনের ও দ্বিতীয় শ্রেণির। বাকি ১১৬ কিলোমিটার তৃতীয় শ্রেণির বা তারও নিচের। এসব সড়কে ১৫ টন ওজনের বেশি পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করতে পারবে না। জয়দেবপুর থেকে ঢাকা হয়ে কাঁচপুর পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার প্রথম শ্রেণির সড়ক আছে। তবে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত অংশটি তৃতীয় শ্রেণি বা তারও নিচে। বাকি অংশ দ্বিতীয় শ্রেণির।

এশীয় মহাসড়কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শক্ত সড়ক কাঠামো আছে চীন, জাপান, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক ও মালয়েশিয়ায়। ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড মহাসড়ক উন্নয়নে আগে থেকেই প্রকল্প নিচ্ছে। ভারতে ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশে তা হয়নি।

জানা গেছে, এশীয় মহাসড়কে অযান্ত্রিক ও ধীরগতির যানবাহন চলাচল করে না। এগুলো চলাচলের জন্য মূল মহাসড়কের পাশে সার্ভিস লেন থাকে। বাংলাদেশে এ ধরনের ব্যবস্থা আছে একমাত্র বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে। এশীয় মহাসড়কে থাকে নিরাপত্তামূলক সীমানাপ্রাচীর। গাড়ির গতি থাকে ১২০ কিলোমিটার। প্রতিটি মহাসড়ককে হতে হয় কমপক্ষে চার লেনের। এগুলোয় কোনো মোড় থাকে না। বাংলাদেশে এ ধরনের মহাসড়ক খুব কম।

দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সরকার গত ২২ জুলাই থেকে মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এ ছাড়া অন্যান্য নিষিদ্ধ গাড়ি চলাচলও করতে পারবে না। অথচ ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য মহাসড়কে আলাদা লেন বা বিকল্প সড়ক থাকলে তা নিষিদ্ধ করতে হতো না।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়াও বিভিন্ন মহাসড়কে বিজ্ঞানসম্মত নকশা, নির্মাণশৈলী, নির্মাণ উপকরণে পরিবর্তন এনে আদর্শ মহাসড়ক তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের দেশে বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে পিচ নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে মহাসড়কের বাজার এলাকাগুলো কয়েক বছর ধরে কংক্রিটের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে।

উৎসঃ   কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - কক্সবাজার

আপনার জন্য নির্বাচিত
https://coxsbazaralo.com/