কক্সবাজার আলো ডেস্ক :
বর লন্ডনী এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না মেয়ের দরিদ্র বাবা মা। তাই মেয়ের বয়স হয়নি জেনেও দুই লাখ টাকা নগদে ৪৬ বছরের লন্ডনী বরের হাতে ১৩ বছরের কিশোরী কন্যাকে তুলে দেন তারা। মর্মস্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর ইশানকোন গ্রামে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর ইশানকোনা গ্রামের লন্ডন প্রবাসী সৈয়দ হাছনু মিয়া (৪৫) মাসখানেক আগে স্ত্রীকে নিয়ে দেশে আসেন। গত ৯ আগস্ট স্ত্রী লন্ডন চলে গেলেও তিনি দেশে থেকে যান।
বুধবার মধ্যরাতে একই গ্রামের কৃষক আরজ মিয়ার কিশোরী মেয়েকে (১৪) বিয়ে করেন তিনি। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী মেয়ের বিয়ের বয়স না হওয়ায় কাবিননামা সম্পাদন না হলেও মেয়ের বাবার অ্যকাউন্টে দুই লাখ টাকা জামানত রেখে তিনি বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে দিতে লন্ডনী পাত্রকে হাতছাড়া করতে চাননি বলে মেয়ের বাবা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে বয়স বাড়িয়ে জন্ম সনদ আনতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তাকে জন্ম সনদ না দিয়ে ফিরিয়ে দেন। এরপর এলাকাবাসী বিষয়টি জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও মোবাইল ফোনে অবহিত করেন। তারপরও গোপনে বিয়ের কাজ শেষ হয়। বুধবার রাত ১২টায় বর কনের আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসান জানান, এলাকাবাসী আলোচনা করছেন বলে শুনেছি। একটা বাল্য বিবাহ হয়েছে। কেউ কোনো অভিযোগ না করায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা নেই।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে বলেন, রাতে মোবাইল ফোনে আমাকে একজন বিষয়টি জানালে আমি পুলিশ প্রশাসনকে বিয়েটি বন্ধ করতে বলেছিলাম। বিয়ে হয়েছে কী না জানা নেই। খবর নিয়ে দেখবো।
জগন্নাথপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে রাতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে, পুলিশ যাওয়ার আগেই বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়ে যায় বলে জানান তিনি।