ঢাকাবুধবার , ৬ ডিসেম্বর ২০২৩
  1. সর্বশেষ
  2. জাতীয়

এজাহার কী? কীভাবে এজাহার দায়ের করবেন?

প্রতিবেদক
কক্সবাজার আলো
১ আগস্ট ২০১৫, ৬:৩৮ অপরাহ্ণ

Link Copied!

কক্সবাজার আলো ডেস্ক :
বাংলায় যা এজাহার, ইংরেজীতে তাহাই ‘FIR’ বা ‘First Information Report’ বা প্রাথমিক তথ্য বিবরণী নামে পরিচিত। সংঘটিত আমলযোগ্য অপরাধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে অপরাধীর শাস্তি দাবি করে অথবা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাবরে উপস্থাপিত কোনো আবেদন বা দরখাস্তকে এজাহার বলা হয়।

১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫৪ ধারায় এজাহার সম্পর্কে বলা হয়েছে। এ ধারার বিধান মোতাবেক, কোনো সংঘটিত আমলযোগ্য অপরাধ সম্পর্কে কোন ব্যক্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানালে ওই কর্মকর্তা নিজে বা তার নির্দেশে অন্য কেউ তা লিপিবদ্ধ করবেন। লিখিত বিবরণ তথ্য প্রদানকারীকে পড়ে শোনাবেন এবং উহাতে তথ্য প্রদানকারীর স্বাক্ষর নিবেন। লিখিত বিবরণের ক্ষেত্রেও তথ্য প্রদানকারী স্বাক্ষর করবেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তা আইন দ্বারা নির্ধারিত বিপি ২৭ নং ফরমে লিপিবদ্ধ করবেন।

আমলযোগ্য অপরাধ হচ্ছে সেই অপরাধ যে অপরাধের জন্য অভিযুক্তকে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে। তবে আমল অযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে তদন্তের জন্য পুলিশকে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিতে হয়।

আইনের উপরোক্ত বিধান বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে, এজাহার লিখিত বা মৌখিক দুই ধরনেরই হতে পারে। মৌখিক এজাহারের ক্ষেত্রে থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অভিযোগকারীর বক্তব্য যথানিয়মে লিপিবদ্ধ করে তাকে পড়ে শোনাবেন। যদি অভিযোগকারীর কোন আপত্তি না থাকে তবে তিনি (অভিযোগকারী) তাতে স্বাক্ষর করবেন। যদি কোথাও কোন সংশোধনীর প্রয়োজন হয় তবে অভিযোগকারীর মর্জি মাফিক তা সংযোজন বা বিয়োজন করে ওই কর্মকর্তা আবারও তা অভিযোগকারীকে পড়ে শুনিয়ে তার অনাপত্তিতে তাতে স্বাক্ষর নেবেন।

লিখিত এজাহারের ক্ষেত্রে, সংঘটিত অপরাধের সবিস্তারিত বিবরন উল্লেখ পূর্বক অভিযোগকারী তাতে স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাবরে দাখিল করবেন।

প্রাপ্ত দরখাস্তে উল্লেখিত তথ্যাবলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজাহারের জন্য নির্ধারিত ২৭ নং বিপি ফরমে লিপিবদ্ধ করে মামলার জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

কোনো কারণে থানা এজাহার নিতে অস্বীকার করলে সরাসরি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়ে নালিশি মামলা করা যেতে পারে। সংঘটিত অপরাধের বিবরণ সবিস্তারে উল্লেখ করতে না পারলেও এজাহার দায়ের করা যাবে বা গ্রহণযোগ্য হবে। সেক্ষেত্রে পুলিশ ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করবেন।

যেকোনো ব্যক্তিই অপরাধ সংঘটন স্থলের নিকটবর্তী থানায় এজাহার দায়ের করতে পারবেন। এজন্য তাকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

যথাযথ ভাবে এজাহার না করার কারণে অনেকেই আইনের পরিপূর্ণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন। ভিন্নভাবে বলতে গেলে অপরাধীরা পার পেয়ে যান। এজাহার কীভাবে দায়ের করতে হবে তা না জানার কারণে অনেকেই থানার আশে পাশে ঘোরাঘুরি করা দালালদের সাহায্য নিয়ে থাকেন (টাকার বিনিময়ে)।

ওইসব দালাল বা দালালরা ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষি না হওয়ায় তারা ঘটনার প্রকৃত বিবরণ তুলে ধরতে ব্যর্থ হন। ফলে এজাহার দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এজাহারের তদন্তে ও সর্বোপরি মামলার বিচারিক পর্যায়ে আসামির বিপক্ষে মামলা প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে ও আসামিরা আইনের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে যায়।

এজাহার হলো ফৌজদারী মামলার ভিত্তি। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে অপরাধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরতে হয়।

এজাহারে যেসব বিষয় উল্লেখ করতে হবে:

১) সুস্পষ্টভাবে অপরাধীর নাম ও ঠিকানা (জানা থাকলে) উল্লেখ করা;
২) অপরাধের পুরো বর্ণনা যৌক্তিকভাবে উল্লেখ করা;
৩) অপরাধ সংঘটনের তারিখ, সময় ও ঘটনাস্থল যথাযথ ভাবে উল্লেখ করা;
৪) অপরাধ সংঘটনের কোনো পূর্বসুত্র বা কারণ থাকলে তা নিঃসঙ্কোচে উল্লেখ করা;
৫) অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে এমনি ব্যক্তিদের সম্পর্কে উল্লেখ করা;
৬) অপরাধ পরবর্তী অবস্থা যেমন- সাক্ষীদের আগমন, আহতদের চিকিৎসা সম্পর্কে বর্ণনা;
৭) সাক্ষীদের নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে;
৮) অপরাধীদের কেউ এজাহার দায়েরে বাধা দিয়ে থাকলে তার ধারাবাহিক বর্ণনা;
৯) কোন বিষয় এজাহারকালীন সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে না পারলে পরে তা জানানো হবে মর্মে একটি কৈফিয়ত দাখিলের যথাযথ সুযোগ উন্মুক্ত রাখা;
১০) এজাহার দাখিলে বিলম্ব হলে তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করা (অযৌক্তিক বিলম্ব মামলার গুণগত মান নষ্ট করে);

এজাহারের পাঁচটি কপি করা ভালো। মূল কপিটি আদালতে পাঠানো হয়। প্রথম কার্বনকপিটি পুলিশ সুপারের নিকট, দ্বিতীয় কার্বন কপি থানায়, আরেকটি কপি সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপারের নিকট এবং অপর কপিটি এজাহার দাতার নিকট রক্ষিত হয়।

এজাহারের গুরুত্ব বা সাক্ষ্যগত মূল্য:

অপরাধ সংঘটনের পর যেহেতু এজাহার করা হয়, তাই এটি হচ্ছে ঘটনার একটি বাস্তব চিত্র। এটি মামলার প্রারম্ভিক দলিল। এজাহারের উপর ভিত্তি করে মামলার তদন্ত কাজ প্রাথমিকভাবে পরিচালিত হয়।

এটি যেকোন মামলার প্রধানতম লিখিত সাক্ষ্য। ফৌজদারী মামলায় এজাহারের গুরুত্ব অপরিসীম। এজাহারদাতা ও এজাহারগ্রহীতার (সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার) মধ্যে অন্তত একজনকে মামলার সাক্ষ্যপর্বে আদালতে এসে সাক্ষ্য দিয়ে তা প্রমাণ করতে হয়।

১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ধারার বিধান অনুসারে এজাহারকে সাক্ষির সাক্ষ্যের সত্যতা কিংবা অসংগতি প্রমাণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে যেকোন অসংগতি অপরাধ প্রমাণে দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে।

এজন্য নিজে অসমর্থ বা অক্ষম হলে একজন বিশ্বস্ত প্রত্যক্ষদর্শী, যিনি এসব বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবনে সক্ষম এবং যথাযথভাবে বুঝে লিখতে পারবেন তার সাহায্য নেয়া যেতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে একজন বিশ্বস্ত ও দক্ষ আইনজীবীর সাহায্য সাহায্য নেয়াই সবচেয়ে ফলপ্রসূ হতে পারে।

লেখক:
অ্যাডভোকেট প্রিয়লাল সাহা

আরও পড়ুন

কক্সবাজার সমুদ্রে গোসল করতে নেমে প্রাণ গেলো পর্যটক দম্পতির

ঘূর্নিঝড় “হামুনে” ক্ষতিগ্রস্ত ১১ শ’ পরিবারকে ইপসা’র আর্থিক সহায়তা প্রদান

রামু উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজলের পদত্যাগ

কক্সবাজারে ডাকাত চক্রের ৬ সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরসার শীর্ষ তিন কমান্ডার অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

রোহিঙ্গা শিবিরে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের গোলাগুলিতে যুবক নিহত

ভারতকে কাঁদিয়ে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুললো অস্ট্রেলিয়া

কক্সবাজারের টেকপাড়া থেকে সাংবাদিক আজিজ রাসেলের মোটরসাইকেল চুরি

রাতের অন্ধকারে নয়, ভোটের মধ্যদিয়ে সরকার গঠন হবে: শেখ হাসিনা

ট্রেনে করে কক্সবাজার বেড়ানোর আমন্ত্রণ পুলিশ পরিদর্শক মোজাহেদ হাসানের গানে

টেকনাফে মাটির দেওয়াল চাপায় একই পরিবারের ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু

ওয়ালটন কাপ নারী বেসবল প্রতিযোগিতা শুরু : ফাইনালে আনসার ও পুলিশ