স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে পরিবারের অভিযোগ
এস এম আরোজ ফারুক, রামু থেকে ফিরে :
কোন ব্যক্তি অপহরণের শিকার হলে সাধারনত পুলিশের দায়িত্ব সেই ব্যক্তিকে মুক্তিপন ছাড়াই অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করা। কিন্তু কক্সবাজারের রামুতে ভিন্য ঘটনা ঘটেছে। অপহৃত কিশরীকে উদ্ধার করে দেয়ার জন্য উল্টো পুলিশ কর্মকর্তা ৫০ হাজার টাকা চেয়েছেন ভূক্তভুগি পরিবারের কাছে। রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোরশেদুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন অপহৃত কিশোরী প্রিয়া বড়–য়ার পরিবার। গত ১লা সেপ্টেম্বর সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে প্রিয়া বড়–য়া (১৩) স্থানীয় কিছু যুবক দ্বারা অপহরণের শিকার হয়। অপহৃত কিশোরী রামু থানার ফতেখাঁরকুলের হাইটুপী এলাকার মৃত অমরসেন বড়ুয়ার ছোট মেয়ে এবং রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। প্রিয়া বড়–য়া অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে গত ৬ সেপ্টেম্বর তার বড় বোন লিজা বড়–য়া বাপ্পী বাদি হয়ে রামু থানায় একটি অপহরণ মামলা (মামলা নং ০৮) দায়ের করেন। সে মামলায় রামুর নুরুল আবছার প্রঃ অলইস্যা (১৮), পিতা- আবু তাহের বস্তী, সাং- মধ্যম কাউয়ারখোপ ও তাহার সঙ্গীয়, সাগর বড়–য়া (৩০), পিতা- মৃত সুব্রত বড়–য়া, সাং- হাইটুপী, ফতেখাঁরকুল, মনির আহাম্মদ (২৮), পিতা- মৃত নজির আহাম্মদ, সাং- শাহমদের পাড়া, চাকমারকুল, আব্দু শুক্কুর (৩০), পিতা- রশিদ আহাম্মদ, সাং- গর্জনিয়া, (হাইস্কুলের পিছনে বাড়ি) ও মিজান (১৮), পিতা- নুর প্রঃ নুরাইয়া, সাং- মধ্যম কাউয়ারখোপসহ ৫ জনকে আসামী করা হয়। কিন্তু মামলা দায়ের করার দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও উক্ত মামলাটির তিল পরিমান কোন অগ্রগতী নেই।
অপহৃত কিশরী প্রিয়া বড়–য়ার বড় বোন লিজা বড়–য়া বলেন, মামলা দায়ের করার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন অপহরনকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি এবং অপহৃত কিশোরীকেও উদ্ধার করা সম্ভব না হওয়ায় এ বেপারে পরিবারের পক্ষ থেকে আমি পুলিশের কাছে এ বিয়য়ে জানতে চাই। কিন্তু মামলার তদন্তকারী অফিসার রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোরশেদুল আলম চৌধুরী ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকার বিনিময়ে আমার বোনকে উদ্ধার করে দেবে বলে জানান। থানার একজন উপ-পরিদর্শকের এমন সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্নতা তদন্তে গাফেলতি ও মুক্তিপন আদায়ের ন্যায় টাকা চাওয়ার ভিত্তিতে আমি উক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একটি অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছি।
এদিকে অসহায় বৌদ্ধ পরিবারের উপর পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল। কক্সবাজার হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুরেশ বড়–য়া বাঙ্গালী বলেন, আমি ভূক্তভুগি পরিবারের সাথে কথা বলে ও থানায় খবর নিয়ে জানতে পেরেছি প্রিয়া বড়–য়া অপহরণের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি পাশাপাশী অভিযুক্ত কাউকে আটক করাও সম্ভব হয়নি। এবং আমি যতটুকো জানতে পেরেছি মামলার তদন্তকারী অফিসার রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোরশেদুল আলম চৌধুরীর অবহেলার কারনেই এই মামলাটির অগ্রগতি হচ্ছে না। তাই কক্সবাজার হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমি প্রশাসনের প্রতি মামলাটির সুষ্ঠ তদন্তের দ্বাবি জানাচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তার এমন অভিযোগের বিষয়ে উক্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে এসআই মোরশেদুল আলম চৌধুরী ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।