বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। কয়েকদিন ধরেই এটি সক্রিয় অবস্থায় আছে। এ কারণে আজ মঙ্গলবার সারাদিন সারা দেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। পানি বেড়েছে অধিকাংশ নদনদীর বিভিন্ন পয়েন্টে। কক্সবাজারে টানা বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে আজ ২৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের সর্বোচ্চ। গোটা চট্টগ্রাম বিভাগেই আজ ভারি বর্ষণ হয়েছে। সেই তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজধানীতে।
ঢাকায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যদিও এতেই জলজট ও যানজটে নাকাল হতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। একইসঙ্গে ঢাকার আশপাশের নদনদীর পানিও বাড়ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামীকাল বুধবারও প্রায় একই অবস্থা থাকতে পারে। আজ বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এ ছাড়া অতি ভারি বৃষ্টির কারণে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ কক্সবাজারের টেকনাফে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৭ মিলিমিটার। চট্টগ্রামে ১৪৪ মিলিমিটার, সিলেটে ১৬৬ মিলিমিটার, রংপুরে ৬৯ মিলিমিটার, রাজশাহী ২৬ মিলিমিটার, রবিশালে ১৬ মিলিমিটার, কুমিল্লায় ৫৭ মিলিমিটার এবং খুলনায় ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, মধ্য এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা তথ্য কেন্দ্রের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা বলা হয়। এতে জানানো হয়, দেশের নদ-নদীর ২৬টি স্থানে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গঙ্গা নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে এবং পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
ঢাকা শহর সংলগ্ন নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
পাউবোর ৮৫টি পানি মনিটরিং স্টেশনের মধ্যে ৬০টি স্থানে পানি বৃদ্ধি ও ২১টি স্থানে পানি হ্রাস পেয়েছে। তিনটি স্থানে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে এবং একটি স্থানের তথ্য পাওয়া যায়নি। ২৬টি স্থানে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত
মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।