এম আবু হেনা সাগর, ঈদগাঁও :
আর ক’টা দিন পর পবিত্র ঈদুল আযহা তথা কোরবানীর ঈদ। এ আনন্দঘন ঈদকে সামনে রেখে জেলাব্যাপী কামারদের টুং টাং শব্দে নির্ঘুম কর্মব্যস্ততার শেষ নেই বললেই চলে। জানা যায়, কোরবানীর পশু জবাই কাজে ব্যবহৃত দা-বটি, ছুরিসহ হরেক রকমের জিনিস ধারানোর কাজে কামারেরা নির্ঘুম তথা গভীর রাত অবদি এ কাজে সময় দিচ্ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা তথা পেকুয়া, চকরিয়া, উখিয়া, টেকনাফ, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, রামু ও কক্সবাজার সদর উপজেলার শত শত কামারদের দোকানে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের লোকজন এসব জিনিসপত্র ধারানোর কাজে মহাব্যস্ত সময় পার করছে। সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজারে একাধিকটির মত কামারের দোকানে মহাব্যস্ততার ধুম যেন চোখে পড়ার মত। তারা টুং টাং শব্দে গভীর রাত পর্যন্ত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের লোকজনের পশু জবাইকাজে ব্যবহৃত দা-বটি, ছুরি নতুন বেচাকেনা কিংবা ধারানোর কাজ নিয়ে কর্মব্যস্থতায় দিন পার করছে তারা। বছরের একাধিক মাস কামাররা বসে থাকলেও বর্তমানে এ ক’টা দিন তাদের ভর মৌসুম বলে চলে। এ মৌসুমে তাদের দম ফেলার সুযোগ নেই। ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকার হরিদাস নামের এক কামার আজকের কক্সবাজারের এ প্রতিনিধিকে- এ চলতি মৌসুমে দৈনিক আয় ৮-১০ হাজার টাকা। কোন কোন ক্ষেত্রে তারও বেশি। দা কিংবা ছুরি ধারানো বড় ছোট হিসেবে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত নেয়। একযুগেরও বেশি সময় ধরে এ কামার পেশায় নিয়োজিত হরিদাস এ পেশা ছাড়তে রাজী নন। তিনি এ পেশায় বেশ সফলতা লাভ করেছেন বলেও জানান। আবার কোরবানীর মৌসুমকে ঘিরে একদিকে গরু বাজারে প্রচন্ড ভিড় বাড়লেও অপরদিকে কামার দোকানেও ভিড় কিন্তু কম নয়। আগেভাগে গ্রামাঞ্চলের লোকজন পশু জবাই কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র ধারানো কাজ শেষ করে ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে চায়। সে হিসেবে ঈদুল আযহা তথা কোরবানীর ঈদের বেশ ক’দিন পূর্বে ধারানো কাজ সম্পন্ন করে ফেলে। অন্যদিকে কামারের দোকানে আসা ঈদগাঁওয়ের গ্রামাঞ্চলের কয়েক বয়োবৃদ্ধ মুরব্বীর সাথে কথা হলে তারা এ প্রতিনিধিকে হাস্যোজ্জ্বল কন্ঠে- প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও কোরবানীর গরু জবাইয়ের হাতিয়ার একটু আগেভাগে প্রস্তুত করে নিচ্ছেন বলে জানান।