সাইফুল ইসলাম , টেকনাফ :
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে বৈধ অবৈধ ফামের্সী । অদক্ষ ফার্মাসিষ্ট দিয়ে চালানো হচ্ছে ফার্মেসী । আর এসব ফার্মেসীতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই সরকারি নিয়মনীতি তোয়ক্কা না করে বিক্রি হচ্ছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে পেীরশহর ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের হাট-বাজার পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠেছে প্রায় ৫শতাধিক ফার্মেসী। এমনকি পাড়ায় গ্রামের বিভিন্ন পানের দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে উচ্চ এন্টিবায়টিক জাতীয় ওষুধ। ওষুধ প্রশাসনের শর্ত অনুযায়ী ফার্মেসিতে একজন করে স্বীকৃত ফার্মাসিষ্ট দিয়ে সনদ প্রাপ্ত ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ বিক্রয়ে বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখানে তা মানা হচ্ছে না।
টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন ফামের্সী ঘুরে দেখা যায়, ওসব ফামের্সীগুলোর অধিকাংশ বিক্রেতার নেই কোন ফার্মাসিষ্ট সনদপত্র আবার অনেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শ্রেনীর গন্ডি পেরুতে পারেনি। এই উপজেলার অধিকাংশ ফার্মেসিতে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অনেক হাতুড়ে ডাক্তারের পরামর্শে হাই এন্টিবায়েটিক সহ আমদানি নিষিদ্ধ ও নিুমানের ওষুধ সামগ্রী দেদারছে বিক্রি করছে এসব ফার্মেসিতে। মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে গুটি কয়েক অবৈধ ফার্মেসিতে জরিমানা সহ বন্ধ করে দিলেও ফার্মেসি মালিকরা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রমরমা ওষুধ বানিজ্য চালিয়ে যেতে দেখা গেছে। অধিকাংশক্ষেত্রে প্রত্যন্ত এলাকায় গড়েউঠা লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিগুলোতে সাধারন মানুষের অজ্ঞতার সুযোগে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে সরবরাহকৃত ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ন ওষুধ বেশী মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। অনেকে অভিজ্ঞতার আলোকে জ্বর-স্বর্দি থেকে শুরু করে ঘুম, নেশা, পেটব্যাথা, জন্ম নিয়ন্ত্রন, কিডনী সুরক্ষার ও গেষ্ট্রীক ওষুধ ছাড়াও অনুমানের ভিত্তিতে বিক্রি করছে বেশী মাত্রার এন্টিবায়োটিক।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানান পরামর্শপত্র ছাড়া ওষুধ বিক্রি সেবনকারীর শুধু মৃত্যুঝুঁকিই বাড়াচ্ছে না, একারণে হত্যা, অপহরণ, আত্বহত্যা ও মাদক গ্রহণের মত গঠনাও গঠছে অহরহ। এ অবস্থায় মৃত্যুঝুঁকিতে বাস করছে টেকনাফ উপজেলার অধিকাংশ অসচেতন ও নিন্ম আয়ের মানুষ। পেীরশহর কিংবা গ্রামের হাটবাজারগুলোর ফার্মেসী সরেজমিনে দেখা গেছে অধিকাংশ ওষুধই বিক্রি হচ্ছে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই। অথচ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ফার্মেসীতে ওষুধ বিক্রিতে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কারণ চিকিৎসকের পরার্মশ ছাড়া ওষুধ সেবনে এ্যজমা, ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন গুরুতর রোগের রোগীদের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখাদেয়ার আশংকা রয়েছে।
অন্যদিকে গ্রাম এলাকার কয়েক ফার্মেসী ব্যাবসায়ী জানান, মূলত চিকিৎসা ফিঃ ও পর্রামর্শপত্রে ডাক্তার নির্দেশিত শারীরিক পরীক্ষার খরচ থেকে বাচঁতেই পরামর্শ পত্র ছাড়াই ওষুধ কিনতে আসেন অধিকাংশ রোগি। ফামের্সীগুলোতে দেখা যায় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই এজেট্রোমাইসিন ৫০০ সিপ্রোক্সিন-৫০০ এমজি, আ্যমোসিক্সিলিন-৫০০, ডাইক্লোফেনাক-১০০ এমজি, বোপাম, ডিসোপ্যান মত নেশা জাতীয় ওষুধ সহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ বিক্রি করছে নিয়মিত। এছাড়া ফার্মেসী থেকে সহজ উপায়ে যে কোন ধরনের ওষুধ কিনতে পারায় বেড়ে চলেছে বিভিন্ন অসামাজিক ক্রিয়াকর্ম। যা ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ কেনার নেতিবাচক উদাহরণ। শুধু তাই নয় প্রতিদিন ওই সমস্ত ওষুধ সেবন করে বিপদগামী হচ্ছে অসংখ্য তরুণ তরুণী।
টেকনাফ হাসপাতারের স্বাস্থ্য ও পকল্প কর্মকর্তা ডা: বখতিয়ার জানান, ফার্মাসিষ্ট ছাড়া ওষুধ বিক্রি হওয়ার কারনে হাই এন্টিবায়েটিক ব্যবহার আশংকাজনক হারে বেড়ে চলেছে। তিনি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন বলে জানান। পাশাপাশি ফার্মেসী গুলোকে ব্যবস্থাপকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ কেনা বেচার ব্যাপারে সর্তক থাকতে বলেন। সচেতনমহল আশংকা প্রকাশ করছেন হাতের নাগালেই এসব ওষুধ পাওয়া গেলে ওষুধের অপব্যবহার আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই ওষুধের অপব্যবহার রোধকল্পে ফার্মেসেীগুলোতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা পূর্বক মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিষিদ্ধঘোষিত ওষুধ জব্দ করা প্রয়োজন বলে মনে করে সাধারন মানুষ গুলো।