দেশে আবার তৈরি হচ্ছে শত বছর আগে বিলুপ্ত মসলিন কাপড়। টানা তিন বছরের গবেষণা আর চেষ্টায় বারো হাত লম্বা একটি মসলিন বোনার দাবিও করেছেন উদ্যোক্তারা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই মসলিন প্রকাশ্যে আনার পরিকল্পনা আছে তাদের।
দৃকের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকার মসলিন আবার ফিরে এলো ঢাকায়। রাজ -নন্দিনীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা এ মসলিনের খ্যাতি ছিল দুনিয়াজোড়া। কিন্তু শতবর্ষ আগে হারিয়ে যাওয়া বাংলার সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান দৃক।
মসলিনের আদি ভূমি শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে তাঁত শিল্পিরা কার্পাসের সুতোয় স্বচ্ছ এ কাপড় বুনেছেন। এক সময় বৃহত্তর ঢাকারই মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ফুটি কার্পাসের চাষ হতো। সেই কার্পাস তুলা থেকে পরম যত্ন আর ধৈর্য্যে বুনতে হোত মসলিন কাপড়রে সুতো। প্রকৌশলীরা বলছেন, আড়াইশ’ কাউন্টের চেয়ে বেশি মিহি সাদা সূতা দিয়ে তৈরি বস্ত্রকেই মসলিন বলা যায়। এ বিবেচনায় দৃকের তৈরী কাপড়টিকেও মসলিন দাবি করা যায়।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রধান এবং তুলা প্রক্রিয়াজাত প্রকৌশল ড. হুসনে আরা বেগম জানান,
ঐতিহ্য অনুযায়ী সূর্য ডুবে গেলে নরম আলোয় উর্বশীদের কোমল আঙ্গুলের স্পর্শে মসলিন বুনতে হতো আর শেষ করতে হতো ভোরের আলো ফোটার আগে।
ইতিহাসবিদ ফিরোজ মাহমুদ জানান, ইউরোপে শিল্প বিল্পবের সূচনা হলে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যায় হাতে বোনা কাপড়ের বাজার। পরবর্তীতে ঔপনিবেশিক যুগে একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যায় বাংলার আদি ও ঐতিহ্যবাহী মসলিন শিল্প।