একই মামলার ওয়ারেন্ট আসামী স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের অন্যতম সদস্য দেশের শীর্ষ মাবপাচারকারী হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুর (৩০) কে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ আটক করেছে। গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭ টায় মডেল থানার এস.আই.ওমর ফারুকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ কক্সবাজার শহরের লাল দীঘির পাড়ে অভযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ভয়ংকর এই মাবপাচারকারীর বিরুদ্বে কক্সবাজারের বিভিন্ন থানায় এক ডজনেরও বেশী মানবপাচার মামলা ছাড়াও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মায়ানমার ও বাংলাদেশেরের বিভিন্ন থানায় মানবপাচার, মাদকপাচার, হত্যা, গুম ও প্রতারণার অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা ও অভিযোগ আছে। আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সদস্য, দেশের শীর্ষ মাবপাচারকারী হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুর কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দারিয়ার দীঘি গ্রামের মৃত আব্দুস ছমদের পূত্র।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের শীর্ষ মাবপাচারকারী আটককৃত হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুররের স্ত্রী মায়ানমারের নাগরিক সাজেদা বেগম (২৭) একই মানবপাচার মামলার ওয়ারেন্ট আসামী হওয়া সত্বেও ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের হরিখোলা গ্রামের নূর মোহাম্মদের পুত্র আব্দুল মান্নান (৩০) কে মিথ্যা প্রলোভনে সমূদ্র পথে মালয়েশিয়ায় পাচার করে থাইল্যান্ড উপকূলে হত্যা ও লাশ ঘুম করার অভিযোগে নিখোঁজ আব্দুল মান্নানের স্ত্রী শারিকা বেগমের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র জানান, ভয়ংকর ও নিষ্টুর স্বভাবের এই মানপাচারকারীর প্রলোভনে পড়ে শত শত মালয়েশিয়াগামী নির্যাতিত, কারাবন্দিত্ব ও প্রতারিত হওয়া ছাড়াও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। উক্ত মানবপাচারকারী হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুর প্রতি মাসে কয়েক বার করে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে আসা যাওয়া করে। গত সপ্তাহে সে মালয়েশিয়া থেকে ফিরেছে। তার নিজের এলাকা রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দারিয়ার দীঘি গ্রামের অসংখ্য লোকজনকে মিথ্যা প্রলোভনে ফেলে সমূদ্র পথে অবৈধ ভাবে মালয়েশিয়ায় পাচার, জিম্মি ও নির্যাতন করে টাকা আদায়, প্রতারণা, হত্যা ও গুম করার অভিযোগে এলাকা ছাড়া হয়ে সে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার শহরের বাদশা ঘোনার নৌ-ক্যান্টেটমেন্ট এলাকায় বসবাস করে আসছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার শহর সহ দেশে বিদেশে নামে বেনামে অঢেল সম্পত্তি আছে তার । আছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। তার স্ত্রী মায়ানমারের আকিয়াব রাজ্যের ডেইগ্যাপাড়ার বাসিন্দা ও বর্তমানে মহেশখালী পৌরসভার গোরকঘাটা বাজার এলাকার মৃত এরশাদ উল্লাহর কন্যা এবং মহেশখালীর আলোচিত মাদক সম্রাট বর্মাইয়া বাবরের বোন সাজেদা বেগমের বিরুদ্ধেও মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের একাধিক মামলা ও অভিযোগ আছে। সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের শীর্ষ মাবপাচারকারী আটককৃত হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুররের স্ত্রী মায়ানমারের নাগরিক সাজেদা বেগম (২৭) ও তার ভাই মাদক সম্রাট বাবর এবং জেলার অপর দুই শীর্ষ মানবপাচারকারী রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দারিয়ার দীঘি গ্রামের মৃত নজির আহমদের পূত্র মুফিজুর রহমান ও মৃত আব্দুল আজিজের পূত্র্র মোজাফ্ফর আহমদ একই মানবপাচার মামলার ওয়ারেন্ট আসামী। এদিকে শীর্ষ মানবপাচারকারী আটককৃত হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুররের স্ত্রী মায়ানমারের নাগরিক সাজেদা বেগম তার স্বামীকে গ্রেফতারের পরপরই কক্সবাজার মডেল থানায় ছুটে গেলে থানার এস.আই.ওমর ফারুক তাকেও গ্রেফতার করে। কিন্তু কথিত প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতার দেন দরবারে ও মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে মানবপাচার মামলার ওয়ারেন্ট আসামী হওয়া সত্বেও তাকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে এস.আই.ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। তবে এস.আই.ওমর ফারুক আটককৃত মানবপাচারকারী আব্দুর রহিম বাহাদুররের স্ত্রী সাজেদা বেগমকে গ্রেফতার ও ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আব্দুর রহিম বাহাদুরের স্ত্রী সাজেদা বেগমসহ আব্দুর রহিম বাহাদুরের অন্যান্য সহযোগি মানবপাচারকারী আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রেফতার কৃত আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আটক রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই.ওমর ফারুক জানান, গ্রেফতারকৃত শীর্ষ মানবপাচারকারী হাফেজ আব্দুর রহিম বাহাদুরকে আজ আদালতে সোপর্দ করা হবে। উর্ধতন কতৃপক্ষ ও মামলার বাদীর পরামর্শ ক্রমে রিমান্ডও চাওয়া হবে