কক্সবাজার আলো ডেস্ক :
পবিত্র হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহর শান্তি, ঐক্য ও সমৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন খতিব। দীর্ঘ লিখিত খুতবায় তিনি সঠিক ইসলামের পথে মুসলিমদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়াও করেছেন।
শনিবার দুপুরে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরায় এবার হজের খুতবা দেন শাইখ ড. মুহাম্মদ বিন হাসান আল-শাইখ। তিনি সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা বোর্ডের সদস্য এবং খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন হাদিস কমপ্লেক্সের প্রধান শাইখ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯৮১ সাল থেকে আরাফার ময়দানের খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন দৃষ্টিহীন ইমাম শাইখ আবদুল আজিজ। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরে গিয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো হজের খুতবা দেন শাইখ আবদুর রহমান আস-সুদাইস। ২০১৮ সালে আরাফার ময়দানে হজের খুতবা দেন বিচারপতি শাইখ হুসাইন ইবনে আবদুল আজিজ ইবনে হাসান।
এবারের হজের খুতবায় হারামাইন শরিফাইনের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার আহ্বান জানিয়ে খতিব সৌদি রাজপরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজসহ রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া করেছেন। খুতবায় মুহাম্মদ বিন সালমানের কথাও উল্লেখ করেন। তার দীর্ঘ হায়াত ও কল্যাণের জন্যও দোয়া করা হয়।
হজের খুতবায় মুসলমানদের আমল পরিশুদ্ধ করার প্রতি বিশেষ জোর দেয়া হয়। পারস্পরিক আচরণ, লেনদেন পরিশুদ্ধ করার তাগিদ দেয়া হয়। আমলের ত্রুটির কারণে মুসলিমরা দুর্যোগের শিকার হবে এমন সতর্কতাও দেয়া হয়।
কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন উদ্ধৃতি উল্লেখ করে মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়া অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়। কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মতো জীবন গঠনের প্রতি তাগিদ দেয়া হয়। পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনকে জীবনের পাথেয় বানাতে বলেন খতিব।
সৃষ্টির প্রতি দয়া ও সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সৃষ্টির প্রতি দয়ার্দ্র হলে আল্লাহ তার প্রতি দয়াশীল হবে বলে হাদিসের বাণী উদ্ধৃত করেন। ধৈর্য ধারণের কথা বলা হয়। এক মুমিন আরেক মুমিনের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার তাগিদ দিয়ে বলা হয়, এর দ্বারা আল্লাহর রহমত অর্জিত হবে।
মুসলমানদের জাকাত আদায়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়। আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতে বলা হয়। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হতেও আহ্বান জানানো হয়।
খুতবার শেষ দিকে হজের আহকাম জানিয়ে দেন খতিব। মুসলমানদের ঐক্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
খুতবার মধ্য দিয়ে শেষ হলো হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। খুতবার পরপরই মসজিদে নামিরায় এক আজানে জোহর এবং আসরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিরা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন। সূর্যাস্তের পর তারা মাগরিবের নামাজ না পড়ে রওয়ানা করবেন মুজদালিফার উদ্দেশে। সেখানে একসঙ্গে মাগরিব ও ইশার নামাজ আদায় করে রাত যাপন করবেন।
আগামীকাল ফজরের পর হাজিরা রওয়ানা করবেন মিনার উদ্দেশ্যে। সেখানে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন। শয়তানকে পাথর মারবেন। এছাড়া বায়তুল্লাহয় গিয়ে তওয়াফ করবেন।