ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার আলো :
কক্সবাজারে একই স্থানে বিএনপি ও যুবলীগের সমাবেশকে ঘিরে ১৪৪ ধারা জারীর পর ভিন্ন স্থানে সমাবেশ করেছে বিএনপি। শহরের ঈদগাহ মাঠে মাত্র আধা ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খাঁন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। সকাল সোয়া ১০টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। শেষ হয় পৌনে ১১টার দিকে। তবে ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মিরা এসে অবস্থান করে অস্থায়ী সমাবেশস্থলে।
এর আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে শহরের শহীদ সরণি সড়কে সোমবার বিকালে সমাবেশের ডাক দেয় কক্সবাজার জেলা বিএনপি। বিএনপির ডাকা সমাবেশস্থলের পাশেই শহীদ মিনারে গণতন্ত্রের বিজয় উদযাপন কর্মসূচির ডাক দেয় জেলা যুবলীগ। পাশাপাশি স্থানে দুই দলের কর্মসূচির কারণে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের গুনগাছতলা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সোমবার সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
ঘোষিত ১৪৪ ধারা বাস্তবায়নে ভোর ছয়টা থেকেই ওই এলাকায় পুলিশ ও র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। ফলে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সেখানে সমাবেশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি বিএনপি।
পরে সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ বিএনপি নেতাকর্মীরা ঈদগাহ ময়দানে জড়ো হয়। সেখানে আধা ঘণ্টার মতো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করার পর নেতাকর্মীরা চলে যান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগীয়) মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি আলহাজ¦ লুৎফুর রহমান কাজল ও কেন্দ্রীয়সহ অন্যান্য নেতারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি আলমগীর মো: মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইপ আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঈদগাহ ময়দান থেকে সরিয়ে দেন। এসময় সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মিরা সমাবেশ থেকে মিছিল নিয়ে কলাতলি গিয়ে হোটেল লংবীচের সামনে গিয়ে অবস্থান করেন। সেখানে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতাকর্মিরা। অবশ্য সেখানে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
এরপর শ্লোগান দিয়ে দিয়ে অবস্থান করেন প্রায় ২ টা পর্যন্ত নেতাকর্মিরা।
ক্ষুব্ধ নেতাকর্মিরা প্রধান অতিথিসহ নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত জানাতে সড়কে অবস্থান করলেও সাবেক সাংসদ আলহাজ¦ লুৎফুর রহমান কাজল পরক্ষনে হোটেল থেকে সড়কে এসে নেতাকর্মিদের সরিয়ে দেয়।
সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের প্রতি সরকারের আস্থা নেই। তাই বিএনপির সাংবিধানিক অধিকারও হরণ করছে তারা। সেই কারনে জনপ্রিয় বিএনপিকে ধ্বংস করে চলছে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা বিএনপি কার্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা অমান্য করে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করা বিএনপি নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপর নেতাকর্মিরা শহরের ঈদগাহ ময়দানে সমাবেশ করছে খবর পেয়ে সেখান থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়। সবশেষ ঈদগাহ মাঠ থেকে মিছিল নিয়ে কলাতলী অবস্থান করলে সেখান থেকেও শান্তিপূর্নভাবে সরে দেয়া হয় নেতাকর্মিদের।