জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, সোমবার দুপুর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ও ৩ হাজার গৃহপালিত পশু আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। শহরের সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া ও নাজিরারটেক এলাকা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে লোকজন সরিয়ে নিচ্ছে কক্সবাজার পৌরসভা। অজানা শঙ্কায় হাজার হাজার মানুষ ছুটছে আশ্রয় কেন্দ্রে। তবে যানবাহন সংকটে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, সাগরের তীরবর্তী হওয়ায় এই এলাকা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী একেএম তারিকুল আলম বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষকে যানবাহন করে আনা হচ্ছে। সবার জন্য খাবারসহ নানা সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

:ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় মাঠে নেমেছে পৌর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। নেতাকর্মীরা বিভিন্ন টিমে বিভক্ত হয়ে কাজ করছে ঝুঁকিপূর্ণ এালাকায়
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারূফ আদনান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে কাজ করছে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ১নং ওয়ার্ডের সমিতি পাড়া, নাজিরার টেক, কুতুবদিয়া পাড়া। এখানে সকাল থেকে পৌর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লোকজনকে নিরাপদে সরাতে মাইকিং করছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য বোঝানো হয়েছে। স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে না আসা পর্যন্ত এই কাজ অব্যাহত থাকবে।
কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও টেকনাফ অন্তত এক লাখ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তাদের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে লোকজনকে ইতিমধ্যে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে।
মহেখালী উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, উপজেলার মাতারবাড়ি, ধলঘাটা ও কুতুবজোমসহ মহেশখালীতে অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। দুপুরের পর থেকে তাদের সরিয়ে আনার কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা জানান, কুতুবদিয়া ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে সাত থেকে আট হাজার মানুষ। তাদের সরিয়ে নিতে কাজ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। বিকাল পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক লোক আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। সন্ধ্যার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ সব লোকজনকে সরিয়ে আনার কথার জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনে পুরো ইউনিয়ন ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে অতি ঝুঁকিতে লোকজনকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনের আশ্রয় দেয়া হচ্ছে। এছারা ঝোড়ো হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ টি ট্রলার।
ইতিমধ্যে প্রচুর পরিমান পানি বিভিন্ন বাড়ি, হোটেলে ডুকে পড়েছে। পানির স্রোতের গতিও বেড়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র। মজুত আছে ১০ লক্ষ টাকা, ৩০০ মে.টন চাল, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কাজ করছে ১০ হাজার সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক ও ১০৮টি মেডিকেল টিম।