টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড রঙ্গিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে শাস্তিমূলক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
অভিযুক্ত টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রঙ্গিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামাল উদ্দিন। তার বাড়ি একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের উলুচামরী এলাকায়। ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর ঘটানোর পর থেকে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই শিক্ষক ও স্থানীয় একটি মহল চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি জামাল হোসাইন মেম্বারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
১৫ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) দুপুরে একদল শিক্ষার্থী মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে এই অভিযোগ প্রদান করেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক কামাল কয়েক মাস ধরে তার স্কুলের কয়েকজন ছাত্রীকে প্রায়ই উত্যক্ত করতেন। সুযোগ পেলে তাদের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করতেন।
শিক্ষার্থীরা জানান-রঙিখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিবাদী কামাল উদ্দিন গত ২০১৮ সাল থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদান করার পর থেকে বিবাদী অহেতুক শারিরীকভাবে নির্যাতন ও ছাত্র-ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি অভিভাবকগণ কয়েকবার অভিযোগ করার পর বিবাদী ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে শ্লীলতাহানি করবে না বলে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে অঙ্গিকারনামা জমা দেন। এরপরেও বিবাদী প্রধান শিক্ষকের কথা অমান্য করে তার অনৈতিক কাজ গুলো চালিয়ে যাচ্ছে। যার প্রমাণ ছাত্র-ছাত্রীদের অভিবাবকসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে রয়েছে। সবশেষ ১৫ ফেব্রুয়ারী শ্রেণীর ক্লাসের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে তিনি অসংখ্য ছাত্রীদের অনৈতিক কাজ করার জন্য প্রস্তাব দেন। যারা অনৈতিক কাজে রাজি নই তাদের বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে মারধর করেন। আর ছাত্র-ছাত্রীরা সহ্য করতে না পেরে একটি অনুলিপি তৈরী করে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোছনের নিকট অবহিত করেন। যারা বিবাদীর কাছে হেনেস্তার স্কীকার হয়েছেন তারা সকলে সংযুক্ত অনুলিপিতে গণ স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিষয়টি উল্লেখ করেন। ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির বিষয়টি ইতি মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তার অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে এলাকার মানুষ ও অভিভাবকগণ অত্র বিদ্যালয় থেকে তার অপসারন সহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করেছেন। যদি তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হয় তাহলে স্কুলে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে জানায় অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। ভুক্তভোগী ছাত্রীরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবি করেন।
প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি লিখিতভাবে জানিয়েছে। অভিযোগ পেয়েছি, সভাপতিকে জানিয়েছি। কমিটির সাথে বসে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরই মধ্যে উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসারের কথা বলেছেন সভাপতি বশির আহমদ। তিনি ঘটনার সঠিক তদন্ত করার কথা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আশীষ বোষ জানান, অভিযোগের বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষককে ডাকানো হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।