গৌরব ও আত্মত্যাগের ৪৫ বছরে পা দিয়েছে দেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একমাত্র দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। সেই গৌরবে গর্বিত হয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিনটি পালন করেছে কক্সবাজার জেলা বিএনপি। কক্সবাজার সদর, রামু ও পৌরসভার হাজার হাজার নেতা-কর্মী রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেষ্টুন হাতে জড়ো হয়েছেন কক্সবাজার শহরে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে শহরের বুকে বর্ণাঢ্য র্যালী করেছে নেতা-কর্মীরা। শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো শহর।
৪৪ বছরে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখন এক যুগসন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বীর সেনানী এই দলটি। এই মুহুর্তে দলটি দেশ থেকে স্বৈরাচারি অগণতান্ত্রিক হাসিনা সরকারকে বিতাড়িত করতে ‘এক দফা’ আন্দোলনে মাঠে রয়েছে। আজ প্রতিষ্ঠার ৪৫তম দিনেও শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে রাজপথ প্রকম্পিত করেছে সমুদ্র পাড়ের শহর কক্সবাজারের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
র্যালিপূর্ব এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল।
সমাবেশে লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, পঁচাত্তরের ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগই করেছিল। বিএনপি কখনোই দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করেনি। ¬¬বরং বিএনপির প্রতিষ্টাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনেছিলেন। শহীদ জিয়ার কারণেই রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে আজকের আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, যার কারণে দেশে এসে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছেন শেখ হাসিনা, সেই জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে চলেছেন অগণতান্ত্রিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ¬
লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, দেশের সব উন্নয়ন হয়েছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে। কক্সবাজারের লবণ ও চিংড়ি চাষে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে তা কেবল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কারণেই হয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এম মোকতার আহমদ।
জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর এলাকায় বিএনপি প্রতিষ্টাবার্ষিকীর দিনটি বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করেছে।
জেলা বিএনপির আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সহ-সভাপতি ও পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক দল সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল মাবুদ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নূর, রামু উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোকতার আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বশর বাবু, জেলা যুবদল সভাপতি সৈয়দ আহমদ উজ্জল, সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দিন জিসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আহবায়ক এডভোকেট মো. ইউনুছ, সদস্য সচিব সরওয়ার রোমন, জেলা মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খালেছা বেগম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি শাহাদত হোসেন রিপন, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমান ফাহিম, জেলা কৃষক দল সদস্য সচিব শরিফ উদ্দিন বাবুল প্রমূখ। এছাড়াও জেলা মৎস্যজীবী দল, জাতীয়তাবাদী সামজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) ও সহযোগী সংগঠনের জেলা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভা শেষে জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ওই সময় নেতা-কর্মীরা রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন ও মাথায় ক্যাপ লাগিয়ে মিছিলে মিছিলে বর্তমান স্বৈরাচারি সরকারের পতনের ডাক তুলেন।
প্রসঙ্গত, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর রাজধানীর রমনা রেস্তোঁরায় আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।