উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৮২০ জন ছাড়িয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টার দিকে দেশটির প্রাচীন শহর ও পর্যটনকেন্দ্র মারাকেশে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
মরক্কোর রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যমের বরাতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। তবে মারাকেশসহ আশপাশ অঞ্চলের কোথায় কতজনের প্রাণহানি হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
মরক্কোর গণমাধ্যমে বলা হয়, ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে তখন দেশটির অধিকাংশ মানুষ ছিলেন ঘুমে। শহরটি শক্তিশালী আফটারশকে কেঁপে উঠলে স্থানীয়রা তাদের বাড়ির বাইরে থাকারই সিদ্ধান্ত নেন। গভীর রাতেও তাদের সড়কে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভূমিকম্পের সময়ে ধারণ করা বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিধ্বস্ত ভবনগুলো থেকে ধুলো উড়ছে। লোকজন প্রাণভয়ে বাড়িঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় ছোটাছুটি করছে।
আবদেলহাক এল আমরানি নামে এক ব্যক্তি এএফপিকে বলেন, ‘দশ মিনিট ধরে বিদ্যুৎ ও ফোন লাইন বন্ধ ছিল। মানুষ সবাই হতবাক ও আতঙ্কে ছিল। শিশুরা কাঁদছিল এবং অভিভাবকরা হতাশ হয়ে পড়েছিল।’
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী রাবাত কেঁপে উঠেছিল। কাসাব্লাঙ্কা এবং এসাউইরাতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস।
মরক্কো এর আগেও বেশ কয়েকবার ভয়াবহ ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে। ২০০৪ সালে দেশটির উত্তর-পূর্বের আল হোসেইমা অঞ্চলে ভূমিকম্পে ৬২৮ জন মারা গিয়েছিল।
আর ১৯৬০ সালে আগাদির অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত ১২ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। এর থেকে ধারণা করা যায় যে এবারের ভূমিকম্পেও হতাহতের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বাড়তে পারে।
শুত্রবার রাতের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মরক্কোর অ্যাটলাস পর্বতমালার মধ্যে। ওই অঞ্চলে এমন অনেক দুর্গম গ্রাম রয়েছে যেখানে পৌঁছানো যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। কাজেই এই ভূমিকম্পের আসল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কী, তা নিশ্চিতভাবে জানতে বেশ কয়েকদিন লেগে যাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।