ঢাকাশনিবার , ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ
  2. কক্সবাজার
  3. পর্যটন

কক্সবাজারে অবরোধের প্রভাব : বিপর্যস্ত পর্যটন শিল্প

প্রতিবেদক
কক্সবাজার আলো
১৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ বিকাল

Link Copied!

রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপি-জামায়াতের চলমান হরতাল-অবরোধে আবারো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। ফের লোকসানের শঙ্কায় পর্যটন ব্যবসায়ীরা। স্থবির হয়ে পড়েছে এখানকার পর্যটন ব্যবসা। এমনিতে করোনার হানায় সেই লোকসানের ধাক্কা সামাল দিতে পারিনি কেউ। এখন আবার অবরোধে হুমকির মূখে পড়েছে পর্যটন শিল্প নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য। দেশে চলমান আন্দোলন সংগ্রামের ফলে কার্যত অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এতে করে অজানা শঙ্কায় রয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। ভর পর্যটন মৌসুমে পর্যটন শূন্য পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির পাশাপাশি ৩০-৩৫ হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার আশংকায় রয়েছে।
অক্টোবর থেকে মূলত কক্সবাজার সৈকত, সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া, সাফারী পার্ক ও হোটেল-মোটেল জোন ছিল লাখো পর্যটকের পদচারণায় মূখর। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ এর পর থেকে নেতাকর্মিদের গ্রেপ্তার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবীতে অবরোধ, হরতালে এ পর্যন্ত কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলো অঘোষিত বন্ধ হয়ে যায়। তবে সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শুক্রবার-শনিবার অবরোধ না থাকায় অল্প পর্যটক দেখা মিলে। কক্সবাজার যেহেতু পর্যটক নির্ভর সেহেতু অনেক হোটেল-রেস্তোরা মানুষের আনাগোনায় কার্যক্রম চলে। কিন্তু এখন কোন পর্যটকও নেই।
এতে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও হোটেল-মোটেল জোন। হোটেল-মোটেলগুলোতে পর্যটকদের নেই কোন আনাগোনা। তাই সৈকতে এখন সুনসান নীরবতা। বলতে এখন হোটেল-মোটেল বন্ধ ঘোষণা না করলেও অঘোষিত বন্ধ হয়ে গেছে অনেক হোটেল ও রেস্তোরা। যে গুলো খোলা আছে সেখানে অনেক কর্মচারীকে ছুটি দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ হোটেলে বাতি পর্যন্ত জ¦লেনা। নেই কোন বুকিং। সড়কও অন্ধকার।
হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন-দেশে চলমান অবরোধে সবচাইতে ক্ষতি হচ্ছে কক্সবাজারে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি কখন ঠিক হবে কেউ জানেন না। এভাবে হানাহানি হলে এবছর কোন ব্যবসা হবে না। ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে দ্বাদশ নির্বাচনের উত্তাপ থাকবে সারাদেশে। এরপর মার্চের একদম শুরুতে রমজান তাই পর্যটন ব্যবসার আর কোন সুযোগ নেই।
সামনের কয়েকমাস কক্সবাজারে পর্যটক আসতে না পারলে পর্যটন ব্যবসায়ীদের বড় লোকসান গুনতে হবে এ শঙ্কায় তারা দারুনভাবে শঙ্কিত। হোটেল মোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত দিনের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে না ওঠতেই ফের অবরোধের কবলে পড়ে তারা দিশেহারা। এখন বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ হোটেল। বিদায় করে দেয়া হয়েছে হোটেল কর্মচারীদের। সব মিলিয়ে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল মালিক আবারো বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩০-৩৫ হাজার কর্মচারী।
এদিকে যাত্রী ও পর্যটক সংকটের কারনে টেকনাফের দমদমিয়া-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলাচলকারী প্রমোটতরী জাহাজ কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন চলাচল বন্ধ ঘোষনা করেছে।
কেয়ারী ট্যুরস এন্ড লিমিটেড এর কক্সবাজারের সিনিয়র অফিসার ও ইনচার্জ নুর মোহাম্মদ ছিদ্দিকী বলেন, প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ জন যাত্রী নিয়ে শুধু কেয়ারী সিন্দাবাদ সেন্টমার্টিন যাচ্ছে। একটা জাহাজ ছাড়তে অনেক টাকা প্রয়োজন হয় এখন খরচের টাকাও উঠছে না। তাই কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
কলাতলির হোটেল বে-ম্যারিনার ম্যানেজার রফিক উল্লাহ জানান, হোটেল মালিক ও কর্মচারীরা বর্তমানে চরম মানবেতন জীবনযাপন করছে। পর্যটন নির্ভর ব্যবসা হওয়ায় হোটেল গুলো এখন খা খা করছে। এভাবে তো চলতে পারে না।
রবি এক্সপ্রেস হুন্দাই এর কক্সবাজারস্থ ইনচার্জ মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, হরতাল অবরোধে আসলে একটা ভয় কাজ করে। কোথাও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোটি কোটি টাকা মালিকের যায়। তাই অবরোধ ছাড়া কোন গাড়ি ছেড়ে যায় না।
হোটেল-মোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিম জানান, পর্যটন স্পট এখন অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে। অবরোধের কারনে একদিকে হোটেল রেস্তোরাঁয় ব্যবসা নাই। অপরদিকে শ্রমিক-কর্মচারী ছাটাই চলছে। বলতে গেলে সবাই এখন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যটক না আসায় ৩০-৩৫ হাজার শ্রমিক কর্মচারী খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তবুও আমরা প্রতিবাদ করে যাচ্ছি কোন কর্মচারী যাতে বাধ্যতামূলক ছুটি বা ছাটাই না করতে।
তারকা মানের হোটেল কক্স-টুডের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আবু তালেব বলেন, পর্যটন মৌসুমের এখন সবচাইতে উত্তম সময়। সেই সময়ে ১০-১২ রুম ছাড়া কোন বুকিং নেই। আগে এই মৌসুমে ফোনের পর ফোন থাকতো কিন্তু এখন বুকিংয়ের একটা কলও আসে না। আসলে হরতাল অবরোধের প্রভাব ভয় কাজ করছে মানুষের তাই কক্সবাজার আসতেছে না পর্যটকরা। তবে কক্স-টুডের কর্মকর্তা কর্মচারীরা স্বপদে সবাই বহাল আছে।
হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, করোনার পর এখন আবার অবরোধে আটকে যাচ্ছি আমরা। এই সময়ে প্রচুর পর্যটক আসতো কক্সবাজারে সেখানে এখন মানুষ না থাকায় খরচের টাকাও উঠছে না। এভাবে হলে পর্যটন শিল্পের সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এই শিল্পের সাথে জড়িতরা শঙ্কায় রয়েছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইয়ামিন হোসেন বলেন, অবরোধের কারনে এই পর্যটন মৌসুমে আশানূরূপ পর্যটক আসতেছে না। হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীদের কষ্টও হচ্ছে। তবে শ্রমিক ছাটাই ও ছুটির বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।

আরও পড়ুন

কক্সবাজারে মাটির ভেতর থেকে ড্রাম ভর্তি অস্ত্র উদ্ধার করলো র‌্যাব

‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করা রায় স্থগিত

অর্থপাচারের মামলায় তারেক রহমানের সাজা স্থগিত

সাবরাং ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি অনুমোদন

সেন্টমার্টিনের বর্জ্য নেয়া হবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসাইক্লিং প্লান্তে

সেন্টমার্টিনের সামগ্রিক সুরক্ষায় কাজ করবে প্রাণ আরএফএল ও ইউএনডিপি

সেন্টমার্টিনে বাড়ছে পর্যটক আগমন, উল্লেসিত দ্বীপবাসী

সমুদ্র শহর কক্সবাজারে সাফ জয়ী নারী ফুটবল দলকে ঐতিহাসিক সংবর্ধনা

সিরিয়া ছেড়েছেন বাশার আল-আসাদ, নিশ্চিত করল রাশিয়া

সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেয়েছেন খালেদা জিয়া

কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন আজ

কক্সবাজারে ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ তিন অস্ত্র ব্যবসায়ী আটক