মুহাম্মদ শাহ জাহান, ইউএই:
বাংলাদেশ দূতাবাস, আবুধাবিতে উৎসবমুখর পরিবেশে যথাযথ মর্যাদায় বাংলাদেশের মহান বিজয়-এর গৌরবোজ্জ্বল ৫২ বছরপূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তার-কর্মচারীসহ বাংলাদেশ স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ, জনতা ব্যাংক লি., বাংলাদেশ বিমান, বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের সূচনাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর, মান্যবর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের পক্ষ হতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। অতঃপর, উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তিবর্গ তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পবিত্র কোরআন হতে তেলাওয়াত এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহিদদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করার মধ্য দিয়ে দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভার সূচনা করা হয়। এরপর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে, উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠন ও কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা করেন। তারা বলেন, আজ বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। এ উন্নয়ন টেকসই করতে হলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে তারা অভিমত দেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত মহোদয় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়, বিশ্বমানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। জাতির পিতা তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে আমাদের দিয়ে গেছেন রাজনৈতিক এবং তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। তাঁরই ধারাবাহিকতায় তাঁর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক মুক্তি মুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত প্রত্যাশা করেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশীগণ তাদের অর্জিতজ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে দেশের উন্নয়নে আরও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মসূচী, বিশেষত রুপকল্প-২০৪১ এগিয়ে নিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবেন। দেশের উন্নয়ন যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি ও বৈধ চ্যানেলে তা প্রেরণের আহ্বান জানান।
পরিশেষে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ এবং ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ এর শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি এবং দেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে মান্যবর রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
মোবাইল : ০১৮১৯-০৩৬৪৬০, ০১৭১২-২১৫৫৪৭. ই-মেইল : coxsbazaralo@gmail.com