বাঁশকাটা খেলোয়াড় সমিতির সহ-সভাপতি আমির হোসেনের দায়ের করা আপিল মামলার শুনানি শেষে আদালতের এমন পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন বাদী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা।
তিনি জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন নিয়ে তাঁর মোয়াক্কেল আমির হোসেন খুবই সংক্ষুব্ধ।
বাদী তার আরজীতে লিখেছেন, নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের আগে সাধারণ সভা এবং খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হয়। অথচ, সেই তালিকা প্রকাশ না করে আবারও ক্ষমতার মসনদে বসার জন্য নীল নকসা তৈরী করেছে বর্তমানে দায়িত্বশীল একটি সিন্ডিকেট। তারা নিজের বউ বাচ্চা আর ভাই বোনসহ বিভিন্ন নিকটাত্মীয়কে রাতারাতি ভোটার বানিয়ে পুরো তালিকাটিকে পারিবারিক মিলনমেলায় রূপান্তর করেছে। যা খুবই দুঃখজনক।
শুধু বাঁশকাটা খেলোয়াড় সমিতি নয়, ন্যাশনাল কক্স ক্রীড়া সংঘসহ আরও অনেক ক্লাবের অভিযোগও রয়েছে এই নির্বাচন নিয়ে।
কক্সবাজারের সচেতন ক্রীড়ামোদিরা জানান, সারাবছর শুধু খায় খায় অবস্থার মধ্যে দায়সারা কিছু কার্যক্রম চালিয়ে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করে এই ক্রীড়া সংস্থা।
যার মধ্যে অন্যতম হলো, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামের মাঠ সংস্কার প্রকল্প, স্টেডিয়ামের চারপাশের বাইরের অংশে দোকান বরাদ্দে নয় ছয়, অল্প টাকায় মাঠ ভাড়া দেয়ার কমিশন বাণিজ্য এবং বিভিন্ন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সেগুলো আয় ব্যয়ে ভুয়া বিল ভাউচার দেখানোসহ নারী ঘঠিত নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকার পরও বহাল তবিয়তে রয়ে যায় অভিযুক্তরা। আর কোন সংবাদকর্মী জানতে চাইলেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন দায়িত্বশীলরা।
অন্যদিকে এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারী বিকেলেও কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে ভোটার তালিকা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্লাবকে বাদ দেয়া এবং নির্বাচন বিষয়ে শুনানীর শেষে আবেদনকারীদের একাংশের সমস্যা সমাধানকল্পে পিছিয়ে যায় ১৭ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। তখন ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ ঘোষনা দেয় কমিশন।
কিন্তু সেখানে কাগজপত্র সব ঠিকঠাক থাকার পরও অদৃশ্য কারণে বাঁশকাটা খেলোয়াড় সমিতির প্রতিনিধির নামটি বাদ দিয়ে দেয় জেলা ক্রীড়া সংস্থা। পরবর্তীতে ন্যায় বিচারের স্বার্থে উচ্চ আদালতের স্বরনাপন্ন হন তিনি।
বাদী আমির হোসেন আরও বলেন, কক্সবাজারের ক্রীড়াঙ্গনকে কুক্কিগত করে রেখেছে একটি কালো সিন্ডিকেট। যারা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতির কাছে সঠিক তথ্য গোপন করে নানা ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। সেই ধারাবাহিকতায় পারিবারিক ক্রীড়া সংস্থা বানাতে আবারও নীল নকসার নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছে বর্তমান কমিটি।
যদিও বরাবরের মতো আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জসিম উদ্দিন।
এর আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনের ভুল তফসিল, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ না করা এবং আপত্তি ও শুনানির তারিখ না রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়ম অভিযোগের
নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দিয়েছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার।
সেখানে সপ্তাহ পরবর্তী শুনানি শেষে এ বিষয়ে সু-বিচারের আশায় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় বাঁশকাটা খেলোয়াড় সমিতি।